‘লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের সরকার উৎখাত’
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যেই ভারতের বর্ধমানের খাগরাগড়ে জঙ্গি কার্যকলাপ চালানো হচ্ছিল। আজ সোমবার বহুল আলোচিত বর্ধমান বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযোগপত্র দিতে গিয়ে এ দাবি করেছে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)।
পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে দি ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নিষিদ্ধঘোষিত জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবিকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন বলে অভিযোগপত্রে বর্ণনা করা হয়ে হয়েছে। বলা হয়েছে, সহিংসতা ও জঙ্গি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি কট্টরপন্থী শরিয়াভিত্তিক ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করাই ছিল তাদের (জঙ্গিদের) লক্ষ্য।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর বিস্ফোরণের ওই ঘটনায় ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র তৈরি করেছে এনআইএ, যেখানে চারজন বাংলাদেশি রয়েছেন। তবে অভিযুক্তদের মধ্যে ১৩ জন গ্রেফতার হয়েছেন। বাকি আটজন পলাতক।
প্রায় ছয় মাসের মাথায় পেশ করা ওই অভিয়োগপত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যকলাপ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল বলেই জেএমবির জঙ্গিরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ঝাড়খণ্ডে প্রশিক্ষণ শিবির তৈরি করেছিল। এসব জায়গায় তারা জঙ্গি কার্যকলাপ, সংগঠনিক সভা, তহবিল সংগ্রহ, নিয়োগ ও ক্যাডার প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত বছর ৯ অক্টোবর ঘটনার তদন্তের ভার নেয় এনআইএ। পরে তারা বাংলাদেশেও সফর করেছে।
বর্ধমানের পাশাপাশি নদীয়া, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন গ্রামে মাদ্রাসার আড়ালে প্রশিক্ষণের বিষয়টিও জেনেছে তদন্ত সংস্থা।
এনআইএ দাবি করেছে, প্রাথমিকভাবে এই সংগঠনটির লক্ষ্য ভারত থেকে কর্মী সংগ্রহ করা এবং এসব কর্মীদের মৌলবাদে দীক্ষা ও প্রশিক্ষিত করে তোলা।
পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ঝাড়খন্ডে কমপক্ষে ১০০টি অনুসন্ধানী অভিযান চালানো হয়েছে। এ ছাড়া সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে আড়াই শতাধিক মানুষের।
গত বছর ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খাগরাগড় এলাকায় একটি বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে দুজন নিহত হন।
প্রাথমিকভাবে একে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ বলে মনে করা হয়েছিল। পরে জানা যায়, এটি ছিল বোমা বিস্ফোরণ। আরো তদন্তে জানা যায়, যে দুজন মারা গেছেন তাঁরা বোমা তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরণের শিকার হয়েছেন।