সিরিয়ার অবরুদ্ধ এলাকায় বিমানে সহায়তা পাঠানোর চিন্তা
যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার অবরুদ্ধ এলাকাগুলোতে বিমানযোগে মানবিক সাহায্য পাঠাতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য।
বিবিসির এক খবরে জানানো হয়, গত মাসে এক বৈঠকের পর ইন্টারন্যাশনাল সিরিয়া সাপোর্ট গ্রুপ (আইএসএসজি) দেশটিতে মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য ১ জুন থেকে সময়সীমা নির্ধারণ করে। সে অনুযায়ী গতকাল বুধবার দামেস্কের কাছের শহর দারায়াতে খুব সামান্য পরিমাণ সাহায্য পাঠানো হয়েছে। তবে খাদ্যদ্রব্য পাঠানো যায়নি।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, সিরিয়ায় বহু অবরুদ্ধ এলাকায় অন্তত ৪৬ লাখ মানুষ বাস করেন, যাঁদের কাছে প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।
বিমান ব্যবহার করে সাহায্য পাঠানোর বিষয়ে আগামীকাল শুক্রবার বৈঠকে বসবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়গুলো সিরিয়ার জন্য যে সহায়তা দিয়েছে, তা দেশের ভেতরে ছড়িয়ে দিতে ব্যর্থ হয়েছে সিরীয় সরকার। বিমান ব্যবহার করে ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর বিষয়টি জটিল, ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ। তবে এটাই এখন সিরিয়ার অবরুদ্ধ এলাকার মানুষের কাছে সহায়তা পাঠানোর একমাত্র উপায়।
সিরিয়া সরকারকে সমর্থন জানানো রাশিয়া ও ইরানের উদ্দেশে ফিলিপ হ্যামন্ড বলেন, এই দেশ দুটির উচিত বিমানে করে সহায়তা পাঠানোর প্রক্রিয়াটি নিরাপদ সম্পন্ন করার জন্য সিরীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো।
এদিকে, গতকাল সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে পাঠানো ত্রাণ-সহায়তাকে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া। আইএসএসজি জোটে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ছাড়াও রয়েছে আরব লিগ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ।
গত এপ্রিলে জাতিসংঘ জানিয়েছিল, দারায়া শহরে সরকারি বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ রয়েছেন প্রায় চার হাজার মানুষ। তিন বছরের বেশি সময় ধরে এখানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই।
এ এলাকায় জরুরি টিকা, বাচ্চাদের খাবার, ওষুধ ও পুষ্টিকর পণ্য পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্রোহীরা অবরুদ্ধ করে রেখেছে মুয়াধামিয়া, উত্তর-পশ্চিম দারায়া এলাকা। প্রায় এক মাস পর এসব এলাকায় গতকাল খাদ্য-সহায়তা পাঠানো হয়েছে।
এসব এলাকায় মানবিক সহায়তা পাঠানো নিয়ে অসংখ্য অনুরোধ সিরিয়া সরকার অগ্রাহ্য করেছে বলে অভিযোগ করেন জাতিসংঘের ত্রাণ কর্মসূচির সমন্বয়ক স্টিফেন ও’ব্রায়েন। গত মাসেও দারায়া শহরটিতে রওনা হওয়া একটি ত্রাণসামগ্রীর বহর মাঝপথে আটকে দেওয়া হয়। যদিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়গুলো এই সহায়তার বিষয়ে একমত হয়েছিল।
অনেক দেন-দরবারের পর জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও সিরিয়ার রেড ক্রিসেন্ট একত্র হয়ে গতকাল থেকে ত্রাণ সরবরাহ শুরু করে।