‘পাস করিয়ে দিন, নইলে বিয়ে ভেঙে যাবে’
‘আমি সৎমেয়ে। আমি ফেল (অকৃতকার্য) করলে আমার সৎমা আমাকে গালাগাল করবেন। আমি খুব গরিব পরিবারের সন্তান। আপনাকে (পরীক্ষক) খুশি করতে উত্তরপত্রের সঙ্গে কোনো রুপি জুড়ে দিতে পারব না। দয়া করে আমাকে পাস করিয়ে দিন।’
ভারতের উত্তর প্রদেশের বোর্ড পরীক্ষায় গার্হস্থ্য বিজ্ঞানের উত্তরপত্রে লেখা এক পরীক্ষার্থীর এই বার্তা সহকর্মীদের পড়ে শোনান পরীক্ষক সরোজ উপাধ্যায়। সঙ্গে সঙ্গে সবাই হাসিতে ফেটে পড়েন। রিনা শর্মাও হাসি দমন করতে পারেননি, যখন তিনি দুটি উত্তরপত্রে এ ধরনের বার্তা দেখতে পান।
আরেক চিঠিতে লেখা, ‘আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে, আগামী জুনে বিয়ের অনুষ্ঠান হবে। আমাকে পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। যদি আমি ফেল করি, তাহলে আমার হবু শ্বশুর-শাশুড়ি বিয়ে ভেঙে দেবেন।’
শুধু অনুরোধ নয়, অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর উত্তরপত্রের মাধ্যমে মজাদার সব হুমকিও পেয়েছেন। পাস করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করে পরীক্ষকদের প্রলুব্ধ করার জন্য কয়েকটি উত্তরপত্রের সঙ্গে রুপিও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি উত্তরপত্রে সতর্ক করে বার্তা দেওয়া হয়েছে। এর একটিতে লেখা হয়েছে, ‘আমাকে ফেল করিয়ে দেওয়ার সাহস করবেন না। তাহলে আমি আত্মহত্যা করব। তার পর ভূত হয়ে আপনাকে তাড়া করব।’
উত্তর প্রদেশ বোর্ডের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির উত্তরপত্রে শিক্ষার্থীদের এসব অনুরোধ ও হুমকি অনেক কাজের চাপের মধ্যেও শিক্ষকদের মধ্যে হাস্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। আরো কয়েকটি উত্তরপত্রে শিক্ষার্থীরা অপ্রাসঙ্গিক বিষয় লিখেছে। ইংরেজি উত্তরপত্রে এক শিক্ষার্থী নার্সারির ‘টুইঙ্কেল টুইঙ্কেল’ ছড়াটি নিজের মতো করে লিখেছে।
আরেক শিক্ষার্থী তার দরিদ্র পরিবারের বর্ণনা দিয়ে লিখেছে, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে তার মা অনেক আঘাত পাবেন। তার বাবার মৃত্যুর পর তার মা ও ১১ ভাইবোনের খাদ্য জোগাড়ের দায়িত্ব তাকেই নিতে হয়েছে। কোনো কোনো শিক্ষার্থী শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে নম্বর দেওয়ার অনুরোধ করেছে। পদার্থবিজ্ঞানের উত্তরপত্রে এক শিক্ষার্থী লিখেছে, আমি দশম শ্রেণির প্রথম স্থান অধিকারী। কিন্তু আমার হাত ফুলে যাওয়ায় আমি লিখতে পারছি না। দয়া দেখিয়ে আমাকে ৩৩ নম্বরের মধ্যে ৩০ নম্বর দিলে আমার অবস্থান ওপরের দিকে থাকবে।
কয়েকটি বার্তা শিক্ষকদের চমকে দিয়েছে। এর মধ্যে এক শিক্ষার্থী লিখেছে, ‘আগার তুনে মুঝে পাস কার দিয়া তো তু মেরা জিজা, আউর নেহি কিয়া তো ম্যায় তেরা জিজা (যদি তুই আমাকে পাস করিয়ে দিস, তাহলে তুই আমার দুলাভাই; তা না হলে আমি তোর দুলাভাই)।