গুন্টার গ্রাস আর নেই
নোবেলজয়ী লেখক, ইউরোপিয়ান ম্যাজিক রিয়ালিজমের স্রষ্টা গুন্টার গ্রাস আর নেই। আজ সোমবার জার্মানির লুবেক শহরের একটি ক্লিনিকে স্থানীয় সকালে ৮৭ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বুকার পুরস্কারজয়ী ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক সালমান রুশদি স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ২৮ মিনিটে তাঁর টুইটারে লিখেন, ‘এটা সত্যি দুঃখের। সত্যিকারের এক প্রেরণা, একজন বন্ধু চলে গেলেন।’
১৯৫৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিল গুন্টার গ্রাসের প্রথম উপন্যাস ‘দ্য টিন ড্রাম’। এটি তাঁকে এনে দেয় জগৎজোড়া খ্যাতি। এই বইয়ের জন্যই ৪০ বছর পরে ১৯৯৯ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান তিনি।
‘দ্য টিন ড্রাম’-এ নাৎসিদের বীভৎসতার চিত্র ফুটে উঠেছে। এই উপন্যাসের মধ্য দিয়েই আলোড়ন তোলেন সমকালীন বিশ্বসাহিত্যে। ‘দ্য টিন ড্রাম’ যেমন প্রশংসিত হয়েছে, তেমনি হয়েছে সমালোচিত। উদ্ভট কল্পনা, পারিবারিক ঐতিহ্য, চিরন্তন ইতিহাস এবং রাজনৈতিক দোলাচলের আশ্চর্য আখ্যান এই উপন্যাস। গুন্টারের নিজের দেশেও এই বই পুড়িয়েছেন বিক্ষুব্ধরা।
১৯২৭ সালে জার্মানির ডানজিগ শহরে জন্মেছিলেন গুন্টার গ্রাস। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯৪৪ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। যুদ্ধের সেই সব অভিজ্ঞতা বারবার এসেছে তাঁর লেখায়।
বাংলাদেশকে ভালোবাসতেন বিংশ শতাব্দীর খ্যাতনামা এ সাহিত্যিক। ১৯৮৬ এবং ২০১১ সালে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। বাংলাদেশসহ পশ্চিমবঙ্গের সমকালীন সাহিত্যিকদের সাথে তাঁর ছিল মধুর সম্পর্ক।
লেখালেখি ছাড়াও রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিষয়ে তিনি ছিলেন সোচ্চার। জার্মান চ্যান্সেলর উইলি ব্র্যান্ডের ভাষণ লিখে দিতেন তিনি। দুই জার্মানির একত্রীকরণের ঘোরবিরোধী ছিলেন নোবেলজয়ী এই সাহিত্যিক। এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে তিনি তুলনা করেছিলেন হিটলারের অস্ট্রিয়া অন্তর্ভুক্তকরণের সাথে।
২০০২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর সর্বশেষ বই ‘ক্র্যাবওয়াক’।