বোকা না হওয়ার ৫ উপায়
রোজকার জীবনযাপনে মানুষকে অনেক অযাচিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। এসব মোকাবিলা করতে গিয়ে অনেক সময় কেউ কেউ বোকা বনে যান। কিন্তু একটু সতর্ক হয়ে চললে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। বিবিসির এক প্রতিবেদনে তা নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে। এতে নির্বোধ বনতে না চাইলে পাঁচটি বিষয় মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
১. নিজের অন্ধকার দিক স্বীকার করুন
আপনার অতীতের সফলতা কিংবা কোনো একটা বিষয়ে পারদর্শিতার কারণে নিজের ভুলগুলো বেমালুম অস্বীকার করতে পারেন। কিন্তু এ প্রবণতা এক ধরনের কনফার্মেশন বায়াস বা নিশ্চিত হওয়াজনিত পক্ষপাতদুষ্টতার তৈরি করে। মনোবিজ্ঞানীরা এ সমস্যাকে চিহ্নিত করেছেন বায়াস ব্লাইন্ড স্পট বা পক্ষপাতদুষ্ট অন্ধবিন্দু হিসেবে। এ ধরনের ব্যক্তিরা নিজের ভুলগুলো স্বীকার করতে চায় না। এর ফলে অবচেতনভাবে পক্ষপাতমূলক আচরণ করে। সৌভাগ্যের বিষয় হলো, ভুলগুলো ধরিয়ে দিতে মনোবিজ্ঞানীরা এ ধরনের লোককে খুঁজছে।
২. বিনয়ী হয়ে ভুল স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকুন
নিজের ভুল স্বীকার করতে কারো লজ্জিত হওয়া উচিত নয়—এমনটাই মনে করেছিলেন আঠারো শতকের কবি আলেকজান্ডার পোপ। আজকের দিনে মনোবিজ্ঞানীদের ধারণা, এ ধরনের বিষয়কে, অর্থাৎ বিনীতভাবে নিজের ভুল স্বীকার করার বিষয়টিকে ওপেন-মাইন্ডনেস বা খোলামনা হিসেবে দেখা হয়। আপনার মন কতটা খোলাসা, তা নির্ভর করে অনিশ্চয়তার সঙ্গে কীভাবে আপনি লড়েন এবং নতুন কোনো তথ্য-প্রমাণ পেলে কত দ্রুত ও ইচ্ছাকৃতভাবে আপনি মনকে পরিবর্তন করেন, তার ওপর।
৩. নিজের সঙ্গে তর্ক করুন
কোনো বিষয়ে অতি আত্মবিশ্বাসী কিংবা নিশ্চিত হওয়ার আগে এটির ঠিক বিপরীত যুক্তিগুলো ভাবা যেতে পারে। আবার এ বিষয়ে অন্যদেরও মত নেওয়া যেতে পারে। এতে করে নিজের দুর্বল জায়গাগুলো চিহ্নিত হবে। ভুল হওয়ার প্রবণতা কমে যাবে।
৪. ভাবুন, যদি এমন হতো
কোনো একটা বিষয় যেভাবে ঘটেছে, তার বিপরীত অনেক চিন্তাভাবনাও করা সম্ভব। যেমন : ইতিহাসের কোনো শিক্ষার্থী ভাবতে পারেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি জয়ী হলে পৃথিবী কেমন হতো? অথবা সতেরো শতকে ব্রিটেনে রাজতন্ত্র পুরোপুরি বিলোপ হয়ে গেলে পরিস্থিতি কেমন হতো?
এ ধরনের ভাবনা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে আমাদের অপ্রস্তুত হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।
৫. কর্মসংশ্লিষ্ট নীতিগত বিষয়গুলো এড়িয়ে যাবেন না
প্রতিটি কাজ বা পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মূল কিছু বিষয় থাকে, যেগুলো মেনে চললে কাজে সফলতা বা পেশাগত সমৃদ্ধি আসে। এ বিষয়গুলো মেনে চললে সহজেই কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানো যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় উড্ডয়ন ও অবতরণের মৌলিক কিছু তালিকা যুক্তরাষ্ট্রের বিমানচালকদের শেখানো হয়েছিল। এতে করে সে সময়ে তাদের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু অর্ধেকে নামানো সম্ভব হয়েছিল। ছোট একটা কাগজে লেখা কিছু নির্দেশনাও হয়তো অনেক সময় বহু লোকের জীবন বাঁচানোর জন্য যথেষ্ট হতে পারে।