বাংলাদেশ থেকে যাওয়া হিন্দুদের আশ্রয় দেবে ভারত : বিজেপি
আগামী বছর আসামে অনুষ্ঠেয় বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া হিন্দু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত। গতকাল রোববার আসামের গুয়াহাটিতে এক র্যালিতে এ কথা বলেন ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সভাপতি অমিত শাহ।
বিজেপি সভাপতিকে উদ্ধৃত করে ডিএনএ ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, ‘স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন না করতে পারায় কিছু হিন্দু বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছে। আগামী বছর আসামে ক্ষমতায় এলে বিজেপি তাদের নাগরিকত্ব দেবে।’ এ সময় তিনি বলেন, শুধু আসামেই নয়, সমগ্র ভারতেই হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিতে কাজ করবে বিজেপি।
বিজেপি সভাপতি আরো বলেন, অবৈধ বাংলাদেশিদের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে আসাম। অথচ এ সমস্যা সমাধানে কংগ্রেস সরকার কিছুই করেনি। বিজেপি ক্ষমতায় গেলে এর সুরাহা করবে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, সমাবেশে লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই, বাংলাদেশে ধর্মীয় কারণে নিপীড়নের শিকার হিন্দুদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। বিজেপি তাদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা দেবে। আসাম একা এ চাপ সামলাতে পারবে না। অন্য রাজ্যগুলোও এ দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেবে।’
অমিত শাহর এ বক্তব্যের আগে আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈও বাংলাদেশ থেকে যাওয়া হিন্দুদের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
যে মুহূর্তে ভারতের নাগরিকদের জাতীয় রেজিস্টার (এনআরসি) হালনাগাদ হচ্ছে, ঠিক সে মুহূর্তে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া হিন্দুদের সুরক্ষা ও নাগরিকত্ব প্রশ্নে তুমুল বিতর্ক চলছে। বিজেপি চাইছে এনআরসিতে বাংলাদেশি হিন্দুদের অন্তর্ভুক্ত করতে। কিন্তু সর্ব আসাম ছাত্র ইউনিয়নের দাবি, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর যারা আসামে প্রবেশে করেছে, তাদের অবশ্যই দেশে ফেরত পাঠাতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, ৪৭-এ ২৯.৭ পারসেন্ট (শতাংশ) হিন্দু ছিল। ৭০-এর নির্বাচনে ২১.৮। আজকে ২০১১ সালের পরিসংখ্যানে ৯.৭ শতাংশ। তাহলে কী দাঁড়াল? এটা পরিষ্কার হচ্ছে, আউট মাইগ্রেশন (বিদেশে স্থানান্তর) হচ্ছে। যাচ্ছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে।’ তিনি বলেন, ‘৪৭- এ পার্বত্যাঞ্চলে আদিবাসী ছিল ৯৮.৬ শতাংশ। এখন ৪৯-এর নিচে। তাহলে কী দাঁড়ায়? আমরা উপলব্ধি করছি, পাকিস্তান আমলে বাংলাদেশে যে প্রক্রিয়ায় সংখ্যালঘুরা দেশের বাইরে গিয়েছে, স্বাধীনতার চার দশক পরও সে প্রক্রিয়া চলছে।’
রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘বাংলাদেশ সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব রক্ষা করা রাষ্ট্র, সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব। এটা সব দলের দায়িত্ব।’ বিজেপির সভাপতির বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওই ব্যাপারে উই হ্যাভ নাথিং টু সে (আমাদের বলার কিছু নেই)। এটা তাদের ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স (অভ্যন্তরীণ বিষয়)।’