রাখাইনে কফি আনানের বিরুদ্ধে বৌদ্ধদের বিক্ষোভ
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের সফরের প্রতিবাদে কট্টরপন্থী বৌদ্ধ নেতারা বিক্ষোভ করেছেন। ধর্মীয় সংঘর্ষ ও হাজার হাজার মানুষ রাজ্য ত্যাগের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতে তিনি আজ মঙ্গলবার এই রাজ্যে সফরে গেছেন।
মিয়ানমারের নতুন সরকারের নেতা অং সান সু চি জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিবকে পশ্চিমাঞ্চলীয় এই রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত উপদেষ্টা কমিশনের নেতৃত্বভার তুলে দিয়েছেন।
কিন্তু কফি আনান রোহিঙ্গা রাজ্যের রাজধানী সিত্তেতে পৌঁছার পর বিক্ষোভ শুরু হয়। তাঁর গাড়িবহর ঘিরে বিক্ষোভকারীরা লাউডস্পিকারে ‘কফি আনানের নেতৃত্বাধীন কমিশন নয়’ স্লোগান দিতে থাকে এবং ‘আমাদের রোহিঙ্গা রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো বিদেশির হস্তক্ষেপ নয়’ লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করে।
বিক্ষোভকারী মে ফিউ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে আমাদের নিজেদের লোকদের সিদ্ধান্ত চাই। আমি চাই না বিদেশিরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিক। এই কারণে আমি এখানে বিক্ষোভ করছি।’
বাংলাদেশ সীমান্তের পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য অবস্থিত। এখানে ২০১২ সালে রাখাইন বৌদ্ধ ও সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ্যে দাঙ্গার পর থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গত ছয় বছরে এ রাজ্যে জাতিগত সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে।এর মধ্যে বেশিরভাগই মুসলিম। হাজার হাজার রাজ্যহীন রোহিঙ্গা চার বছর ধরে শরণার্থী শিবিরে দিন কাটাচ্ছে। সেখানে তারা স্বাস্থ্যসেবা ও প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছে না। কট্টরপন্থী বৌদ্ধদের জন্যই তারা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বৌদ্ধদের দাবি, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয়। তারা অবৈধ অভিবাসী। তাই তাদের বৌদ্ধরা রোহিঙ্গা না বলে বাঙালি মুসলিম বলে থাকে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী সু চি রোহিঙ্গাদের দুর্দশা মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এই সমস্যা সমাধান করতেই গত মাসে সু চি কফি আনানকে একটি উপদেষ্টা কমিশনের নেতৃত্ব দিতে বলেছেন। কফি আনান এ দায়িত্ব নিয়ে সিত্তেতে পৌঁছার পর সেখানকার নেতা ও সুশীল সমাজের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং এ সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন।