মালালার ওপর হামলাকারী ১০ জনের যাবজ্জীবন
শান্তিতে নোবেলজয়ী পাকিস্তানের মানবাধিকারকর্মী ও স্কুলছাত্রী মালালা ইউসুফজাইয়ের ওপর হামলাকারী ১০ জঙ্গির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সোয়াতের একটি আদালত এই রায় দিয়েছেন বলে আদালত সূত্র ও আইনজীবীদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
নারী ও শিশুশিক্ষার পক্ষে কথা বলায় ২০১২ সালের অক্টোবরে স্কুলবাসে বাড়ি ফেরার সময় মালালার ওপর হামলা চালিয়েছিল ওই জঙ্গিরা। তাঁকে হত্যা করতে মাথায় গুলি চালানো হয়। উত্তর-পশ্চিম সোয়াতের ওই হামলায় মালালার সহপাঠী সাজিয়া ও কাইনাত নামে আরো দুজন আহত হয়েছিলেন। ঘটনার দায় স্বীকার করেছিল তেহরিক ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)।
পাকিস্তানের এই ঘটনাটি তখন স্পর্শ করেছিল বিশ্বহৃদয়। মালালার ওপর হামলার পর বিশ্বজুড়ে উঠেছিল নিন্দার ঝড়। পাকিস্তান সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আহত মালালাকে চিকিৎসার জন্য তাঁকে যুক্তরাজ্যে পাঠিয়েছিল। এরপর দেশ-বিদেশে কয়েক দফা চিকিৎসার পর আশঙ্কামুক্ত হন মালালা। সুস্থ হওয়ার পর থেকে যুক্তরাজ্যেই অবস্থান করছেন পাকিস্তানের আলোচিত এই কিশোরী।
ঘটনার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে মালালার ওপর হামলাকারী ১০ জঙ্গিকে আটক করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। আটক করা এই জঙ্গিরা আদালতে স্বীকার করে টিটিপি কমান্ডার মোল্লা ফজলুল্লাহর নির্দেশেই তারা মালালাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর ওপর আক্রমণ চালিয়েছিল। এই অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার পর আজ তাঁদের বিরুদ্ধে এ দণ্ডাদেশ দেওয়া হলো।
নারীশিক্ষার অবদানে মালালার এই ত্যাগ ও অবদানের পর তিনি বিশ্বব্যাপী ‘আইডলে’ পরিণত হন। ২০১৩ সালে টাইম ম্যাগাজিন মালালাকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অন্যতম বলে অভিহিত করে। ২০১৪ সালে তাঁর এই লড়াইয়ের স্বীকৃতি দিতে ভারতের মানবাধিকারকর্মী কৈলাস সত্যার্থীর সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান তিনি।