পারমাণবিক বোমার পঞ্চম পরীক্ষা চালাল উত্তর কোরিয়া
পঞ্চমবারের মতো পারমাণবিক বোমার সফল পরীক্ষা চালানোর দাবি করেছে উত্তর কোরিয়া।
স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার সকালে পানজি-রি পারমাণবিক স্থাপনার কাছে এই পরীক্ষা চালানো হয়।
উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নতুন তৈরি একটি পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে পারমাণবিক বোমা যুক্ত করায়ও সফলতা এসেছে।
এর আগে আজ সকালে পানজি-রি পারমাণবিক স্থাপনার কাছে ৫ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণেই এই ভূকম্পন হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করে দক্ষিণ কোরিয়া।
আর বিস্ফোরণের পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, কোনো ‘বিস্ফোরণে’র কারণেই এমন ভূকম্পন দেখা গেছে। তবে বিস্ফোরণ ও বোমার ধরন সম্পর্কে তারা নিশ্চিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের মিডলবুরি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের উত্তর কোরিয়া বিশ্লেষক জেফরি লুইস বলেন, ধরন দেখে বোঝা যায়, অন্তত ২০ থেকে ৩০ কিলোটন বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়ে থাকতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়া জানায়, উত্তর কোরিয়ার ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ। দেশটির পারমাণবিক বোমার উন্নয়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, উত্তর কোরিয়ার আগের আণবিক বোমার চেয়ে আজকের বোমাটির বিস্ফোরণের ক্ষমতা ছিল প্রায় দ্বিগুণ।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিয়ুন-হাই বলেন, উত্তর কোরিয়ার এমন কর্মকাণ্ড ‘আত্মবিধ্বংসী’, যা দেশটির নেতা কিম জং-উনের ‘খ্যাপাটে বেপরোয়া ভাবের’ প্রকাশ।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, উত্তর কোরিয়ার এমন কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য উদ্বেগের। এর ফলে দেশটির ওপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে, আরো বিচ্ছিন্ন হবে উত্তর কোরিয়া।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার এমন কার্যক্রম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এমন পরীক্ষার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা জাপানের নিরাপত্তা এবং কোরীয় উপদ্বীপের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকির।
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষার ঘোষণার পরপরই দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
পারমাণবিক বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর কোরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ। তবে এই নিষেধাজ্ঞার পরও এমন পরীক্ষা অব্যাহত রেখেছে দেশটি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশটি হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ছাড়া থেমে থেমে বছরজুড়েই চলেছে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা।