গাভীর নামে পরীক্ষার প্রবেশপত্র!
ধরা যাক, কোনোভাবে আপনার হাতে একটি পাবলিক পরীক্ষার প্রবেশপত্র এসে পড়ল। আপনি ভাবলেন, না জানি কোন বেচারার কার্ড হারিয়েছে। দ্রুত এটা তার মালিককে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। তার পর নাম-ঠিকানা দেখতে গিয়ে চোখ কপালে উঠল আপনার। একি? এখানে তো একটি গাভীর ছবি দেখা যাচ্ছে! চোখ কচলে নিলেন, ভুল দেখছেন না তো?
জি না, একটুও ভুল দেখছেন না। ভারতের শ্রীনগরে সত্যিই একটি গাভীর নামে প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়েছে। জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর বোর্ড অব প্রফেশনালস এন্ট্রান্স একজামিনেশনসের অধীনে ডিপ্লোমা ইন পলিটেকনিকের ২০১৫ সালের প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য ‘কাচির গাও’ নামে ওই গাভীর জন্য প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়েছে। প্রবেশপত্রে ‘কাচির গাও’-এর বাবার নাম লেখা আছে গুরা দান্দ। মজার ব্যাপার হলো, কাচির গাও শব্দের অর্থ ‘বাদামি গরু’ আর গুরা দান্দের অর্থ ‘লাল ষাঁড়’।
আগামী ১০ মে হতে যাওয়া লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে গাভীটির সিট পড়েছে বেমিনার সরকারি ডিগ্রি কলেজে। আর এ খবর প্রকাশের পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ।
রাজ্যটির বিরোধী দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের মুখপাত্র জুনাইদ আজিম মাট্টু টুইটারে এই প্রবেশপত্রের ছবি আপলোড করার পর বিষয়টি সবার নজরে আসে। জুনাইদ টুইটারে লেখেন, ‘জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর বোর্ড অব প্রফেশনালস এন্ট্রান্স একজামিনেশনস কর্তৃপক্ষ শনাক্তকরণের ধাপ পার করে গাভীটির নামে রোল নম্বরের স্লিপ দেয়। ‘মিস কাচি গাও’ বোর্ডকে মূল্য পরিশোধের পর যে কনফারমেশন দেওয়া হয়েছে, তার কপিও আমার কাছে আছে।’
মাট্টু দাবি করেন, বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে রাজ্য সরকারের নির্দেশে এই প্রবেশপত্র-সংক্রান্ত সব তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
ফার্স্ট পোস্ট ডটকম জানিয়েছে, মাট্টুর পোস্টে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ মন্তব্য করেছেন, ‘দারুণ! কাচির গাও যদি পরীক্ষায় অংশ নিত, তাহলে কতই না ভালো হতো।’
তবে এ ব্যাপারে বোর্ড অব প্রফেশনালসের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ফারুক আহমাদ মীর বলেন, কেউ যদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ ধরনের কৌতুক করেন, তাহলে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।
ফারুক মীর আরো বলেন, ‘এখন সব আবেদন অনলাইনে পূরণ করা হয়। সেখানে একটি ছবি শনাক্তকরণ সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। এই সফটওয়্যার মানুষ এবং প্রাণীর ছবির মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না। কেউ একজন এটা নিয়েই কৌতুক করেছে।’
তবে প্রবেশপত্রের ওপরে করা সইয়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি স্বহস্তে প্রতিটি প্রবেশপত্রে সই করিনি। এটা এক ধরনের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি, যেখানে নিজে থেকেই সই হয়ে যায়।’
তবে এ ধরনের কৌতুক যে করেছে, তার বিরুদ্ধে বোর্ডের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানান ফারুক মীর। যে আইপি ঠিকানা ব্যবহার করে এ ধরনের মজা করা হয়েছে, সেটি খুঁজে বের করা হবে বলেও জানান তিনি।