স্থলসীমান্ত বিল সংশোধনে আসামের আপত্তি
আসামকে না জানিয়েই বাংলাদেশ-ভারত স্থলসীমান্ত চুক্তি বিল সংশোধনের কঠোর সমালোচনা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। গতকাল শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেওয়া এক চিঠিতে তিনি এ অবস্থান ব্যক্ত করেন।
দ্য হিন্দুর খবরে বলা হয়, চিঠিতে চুক্তির ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সঙ্গে পরামর্শ না করা এবং আসামসংক্রান্ত ধারাগুলোকে অন্তর্ভুক্ত না করেই পার্লামেন্টে চুক্তির অনুসমর্থনের বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন গগৈ।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিলটি সংশোধনের কারণ সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। পার্লামেন্টে চুক্তিটি অনুসমর্থনের সময় আসামসংক্রান্ত ধারাগুলোকে বাদ দিয়ে আমাদের জনগণের স্বার্থরক্ষা কীভাবে হচ্ছে তা-ও বুঝছি না।’
গগৈকে উদ্ধৃত করে রাজ্য সরকারের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এই সিদ্ধান্ত সহযোগিতামূলক মৈত্রীতন্ত্রের মূলনীতির বিরোধী, যার পক্ষে আপনি (মোদি) কথা বলে আসছেন।’
চিঠিতে ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিতে আসামকে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানিয়েছেন গগৈ।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করেন, স্থলসীমান্ত চুক্তির শর্তগুলো ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তির অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি বলেন, ‘এই চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের আসাম অংশে করিমগঞ্জ জেলার লাঠিট্লিা-দুমাবাড়ি সেক্টর, ধুবরি জেলার কালাবারি (বড়ইবাড়ি) এবং করিমগঞ্জ জেলার পাল্লাথাল এলাকার রেডক্লিফ লাইন নতুন করে নির্ধারণ করা হবে।’
ভারত-পাকিস্তান ভাগের পর ১৯৪৭ সালের ১৭ আগস্ট রেডক্লিফ লাইন নামে সীমান্তরেখা টানা হয়। তৎকালীন সীমান্ত কমিশনের চেয়ারম্যান স্যার সিরিল রেডক্লিফ এ সীমান্তরেখার প্রবর্তন করেন। এ রেখা অনুযায়ী, চার লাখ ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হয়।
সংশোধিত বাংলাদেশ-ভারত স্থলসীমান্ত চুক্তি বিল নিয়ে কংগ্রেস-বিজেপি মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। আসছে ৫ মে বিলটি ভারতের রাজ্যসভায় পেশ করা হবে এবং তা চলতি অধিবেশনেই পাস হবে বলে আশা করছেন বিজেপির নেতারা। তবে আসামকে বাদ দিয়ে আংশিক স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করতে চাইলে কংগ্রেস বাধা দেবে বলে জানিয়েছে। এতে চুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।