মডেল যখন ভিক্ষুক
চীনের সাংহাইয়ের রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে থমকে যান পথচারীরা। রাস্তায় একদল নারী ভিক্ষুক। ছেঁড়া পোশাক, হাতে ছড়ি, গায়ে কালি-ঝুলি—সবই ভিক্ষুকের মতো, তবে চেহারা মোটেই নয়। চেহারা বরং ফ্যাশন মডেলদের সঙ্গে মেলে। আসলে তাঁরা ফ্যাশন মডেলই, ভিক্ষুকের বেশে নেমেছেন প্রতিবাদে।
পণ্যের প্রচার থেকে মডেলদের বাদ দিয়েছে ‘সাংহাই অটো শো’। তাদের যুক্তি, গাড়ি দেখার চেয়ে মডেলদের দিকেই বেশি আকর্ষণ দেখা যায় দর্শনার্থীদের। তাই এ বছর গাড়িমেলায় থাকছে না কোনো আকর্ষণীয় মডেল। এর বদলে ‘অটো শো’তে চকলেট বিতরণ ও পণ্য সম্পর্কে জানাতে নিয়োগ করা হবে কিছু আকর্ষণীয় নির্বাহী।
সাংহাই অটো শো কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না স্থানীয় মডেলরা। এটি তাঁদের রুটি-রুজিতে হস্তক্ষেপ। তাই এর প্রতিবাদে গত সপ্তাহে সাংহাইয়ের রাস্তায় ভিক্ষায় নামেন মডেলরা। এ সময় মডেলদের সাজপোশাকও ছিল ভিক্ষুকের মতো—ছেঁড়া পোশাক, হাতে ছড়ি, আবার কেউ কেউ মুখে কালি লেপে নেন।
ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। সাংহাইয়ের রাস্তায় ভিক্ষায় নামা মডেলদের ক্ষেত্রে এটি সত্য। ভিক্ষায় নেমেও তাঁরা প্রণ্যের প্রচার চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভিক্ষুকের বেশে মডেলদের হাতে থাকা কাগজের বোর্ডে লেখা ছিল, ‘থিন কুং ফু খেয়ে ওজন কমিয়ে কী হলো, যদি গাড়ির মডেলই হতে না পারলাম।’ থিন কুং ফু হলো একটি পাউডারের মতো খাবার, যা প্রতি সপ্তাহে প্রায় সাত কেজি ওজন কমাতে পারে বলে দাবি করা হয়।
প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে পণ্যের প্রচারের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কয়েকজন মডেল। ওই প্রতিবাদ নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সাজানো কি-না? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তবে এমন প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন মডেলরা। কিন্তু কয়েকজন মডেল আবার তাঁদের ব্লগে ‘থিন কুং ফু’-এর লিংক দিয়েছেন। এসব ছাড়াও আয়ের জন্য শরীরের ওপর নির্ভর করা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চীনাদের মধ্যেই বিতর্ক হয়েছে।