ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচন : পরবর্তী কাণ্ডারি কে?
ওয়েস্ট মিনিস্টার ধাচের গণতন্ত্রের সূতিকাগার নামে পরিচিত দেশ ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচন আগামী ৭ মে। ১২১৫ সালে ম্যাগনাকার্টা চুক্তির মধ্য দিয়ে যে গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল দেশটিতে, গণতন্ত্রের এ ধারাবাহিকতা এখন বিশ্বব্যাপী অনুসরণ করা হচ্ছে। তিনদিন পরের এই নির্বাচন নিয়ে ব্রিটেনে চলছে এখন নানা হিসেব-নিকেশ। কে হচ্ছেন দেশটির পরবর্তী কাণ্ডারি? এ প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর এখনো অনেকের কাছে অজানা।
ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে লড়ছে এমন সবকটি দল তাদের নিার্ব্চনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে। সব ইশতেহারের একটি জায়গায় মিল খুব বেশি। সেটি হল- প্রত্যেকটি দল নিজেদেরকে শ্রমিক কল্যাণে নিবেদিত বলে উল্লেখ করেছে।
ধনীদের দল হিসেবে পরিচিত ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, আমরা নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছি।কনজারভেটিভ পার্টি যুক্তরাজ্যের শ্রমজীবী মানুষের পার্টি। আমরা তাদের জীবনের প্রতিটি স্তরে নিরাপত্তা দিতে বদ্ধ পরিকর।
প্রায় একই ধরনের কথা রয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী লেবার পার্টির প্রকাশিত ইশতেহারেও। তাঁরা জোর দিয়েছে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির উপর।
ইশতেহার ঘোষণার পরও ক্ষমতায় যাবে কোন দলটি খোদ ব্রিটিশ পত্রিকার জরিপও সেই কুয়াশা কাটিয়ে উঠতে পারছে না। তাদের ধারণা, এবারের নির্বাচনও একটি ঝুলন্ত সংসদ উপহার দেবে।সেক্ষেত্রে কোনো দলই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ৩২৬টি আসন এককভাবে দখল করতে পারছে না। ব্রিটেনের সংসদের নিন্ম কক্ষ হাউজ অব কমন্সের মোট আসন সংখ্যা ৬৫০টি।সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন হয় ৩২৬টি আসন।
ফলে সরকার গঠন করতে কনজারভেটিভ পার্টি বা লেবার পার্টিকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (লিবডেম), স্কটিশ ন্যাশানালিস্ট পার্টি (এসএনপি), ইউনাইটেড কিংডম ইন্ডিপেন্ডেন্ট পার্টি (ইউকেআইপি) বা গ্রিন পার্টির উপর নির্ভর করতে হতে পারে।
তবে ঐতিহ্য হচ্ছে, ১৯২২ সাল থেকে কনজারভেটিভ পার্টি ও লেবার পার্টি পালাক্রমে ব্রিটেনে সরকার পরিচালনা করে আসছে। গত ১ মে ব্রিটেনের জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম ‘দি গার্ডিয়ান’ সাধারণ নির্বাচন নিয়ে একটি জরিপ প্রকাশ করে। এতে লেবার পার্টি ২৬৭টি আসন এবং কনজারভেটিভ পার্টি ২৭৬টি আসন পেতে পারে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে। তবে জরিপে কনজারভেটিভরা এককভাবে এগিয়ে থাকলেও তাদের জোটভুক্ত দল লিবডেমের চেয়ে লেবার পার্টির শরিক এসএনপি সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। জরিপ বলছে- লিবডেম সাধারণ নির্বাচনে পেতে পারে ২৭টি আসন আর এসএনপি পেতে পারে ৫৫টি আসন। ফলে কনজারভেটিভ ও লিবডেম মিলে পেতে পারে মোট ৩০২টি আসন; বিপরীতে লেবার ও এসএনপি মিলে পেয়ে যেতে পরে ৩২২টি আসন।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত অনেকগুলো জরিপেই প্রায় এই ধরনের আভাস দেওয়া হয়েছে। এতে সরকার গঠনের জন্য ছোট ছোট দলগুলোর মন পেতে বড় দল দুটোকে অনেক ছাড় দেওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
কিন্তু ব্রিটেনের নির্বাচনে মানুষ কাকে কাণ্ডারি নির্বাচিত করেন তার ফল পেতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ৮ মে পর্যন্ত।