পাকিস্তানে নদীর পানি বন্ধ করতে পারে ভারত
জম্মু-কাশ্মীরের উরিতে সেনা ব্রিগেডের একটি সদর দপ্তরের ওপর সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা আছে দাবি করে তাদের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। এরই অংশ হিসেবে ভারত থেকে পাকিস্তানে যাওয়া নদীর প্রবাহ বন্ধের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে জম্মু-কাশ্মীরের উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী উরি এলাকার সেনা ব্রিগেডের সদর দপ্তরে হামলা হয়। এতে ১৮ সেনা ও চার হামলাকারী নিহত হন। এ ছাড়া ওই ঘটনায় আহত ৩৫ সেনাকে সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া হয়। হামলার পরপরই এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। আর এ হামলার কড়া জবাব দিতে চান ভারতীয় সেনারা।
এনডিটিভি জানায়, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদকে উরি হামলার জন্য দায়ী করা হয়।
ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, কেরালা রাজ্যের এক বক্তৃতায় বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে কড়া বক্তৃতা দেওয়ার পর আজ সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পররাষ্ট্র, পানিসম্পদসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তিনি।
বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদি। আর এরই মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধ কড়া পদক্ষেপ হিসেবে সিন্ধুর পানি চুক্তি নিয়ে আরেকবার ভেবে দেখবে ভারত।
ভারত হয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করা সিন্ধু নদী পাকিস্তানের বড় একটি অংশে প্রবাহিত হচ্ছে। এই নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টিও দেখছে ভারত সরকার।
১৯৬০ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আইয়ুব খানের মধ্যে সিন্ধু পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির মধ্যস্থতা করে বিশ্বব্যাংক। চুক্তি অনুযায়ী, উপমহাদেশের পশ্চিমমুখী ছয়টি নদীর মধ্যে সুতলেজ, বিয়াস ও রাভি নদীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে ভারতের হাতে। অন্যদিকে প্রায় কোনো বিধিনিষেধ ছাড়াই অপর তিন নদী ঝিলুম, চেনাব ও সিন্ধুর পানি পাবে পাকিস্তান।
সিন্ধু চুক্তি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দুটি যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছে এবং উত্তেজনায় কমিয়েছে। তাই চুক্তি নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে বিভক্ত বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকদের মতে, সিন্ধু পানি চুক্তি একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। এর মানে হলো ভারত এককভাবে এই চুক্তি বাতিল করতে পারে। এর ফলে আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দার শিকার হবে ভারত।
অনেক বিশ্লেষক আবার বলেন, সিন্ধুর নদীর উৎস চীন। ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশটি কোনো চুক্তি করেনি। চীন সিন্ধুর পানি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করলে ভারত ৩৬ শতাংশ পানি হারাবে।