জিম্মি ঘটনার মধ্যেই ছত্তিশগড়ে মোদি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ শনিবার নকশাল উপদ্রুত ছত্তিশগড়ের দাতেনওয়াদা জেলা সফর করছেন। তাঁর সফরকে ঘিরে নকশালরা সুকমা জেলার দুটি গ্রামের কয়েক শ মানুষকে জিম্মি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সফর বয়কট করে তারা ৮ ও ৯ মে দুই দিনের জন্য ‘দানদাকারানয়া বন্ধ’ ডেকেছে।
দাতেনওয়াদা জেলার স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর উপলক্ষে কয়েকটি স্তরে নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর ও বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ১০ হাজার আধাসামরিক বাহনীর সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। স্থানীয় প্রশাসন আরো জানিয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে উপাজাতীয়দের সব ধরনের সাপ্তাহিক বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দাতেনওয়াদা জেলার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী দুটি বৃহৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন, যার একটি হলো বৃহৎ ইস্পাত কারখান। ১৮ হাজার কোটি রুপির এই প্রকল্পে ১০ হাজার স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। অপরটি রোঘাট-জগদালপুর রেললাইনের দ্বিতীয় পর্যায়।
২৪ হাজার কোটি রুপির এই প্রকল্পের মাধ্যমে পণ্যবহনের ভাড়া কমে যাবে। দুটি প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন উপলক্ষে প্রয়োজনীয় আয়োজন সম্পন্ন বলে জানান কর্মকর্তারা।
নরেন্দ্র মোদির আজকের ছত্রিশগড় সফরকালেই নয়া রায়পুরে আরো কয়েকটি বৃহৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করার কথা ছিল। যার মধ্যে আছে, একটি তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পুলিশ সদরদপ্তর এবং ৪০ হাজার স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য আবাসন ব্যবস্থা। তবে গতকাল শুক্রবারের ঝড়ের কারণে মঞ্চ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নয়া রায়পুরে প্রধানমন্ত্রীর সফর বাতিল করা হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, মঞ্চ তৈরির সময় আবহওয়া খারাপ হয়। ঝড়ের কারণে মঞ্চ ভেঙে পড়ায় শ্রমিকসহ ৫০ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, পরিবর্তিত সফরসূচি অনুযায়ী বিমান থেকে নেমে ২২ কিলোমিটার সড়কপথে নকশাল উপদ্রুত দাতেনওয়াদা এলাকায় যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একই সঙ্গে সেখানকার একটি কলেজ পরিবদর্শন করবেন।
দাতেনওয়াদা সফরকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছয়জন কিশোর-কিশোরীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলবেন যারা মাওবাদীদের হামলায় নিহত হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি সেখানকার ১০০ একর জমির ওপর ১২০ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত শিক্ষা শহর পরিদর্শন করবেন। এই শিক্ষা শহর থেকে প্রতি বছর পাঁচ হাজারের বেশি বঞ্চিত শিশু শিক্ষার সুযোগ পাবে বলে আশা করে স্থানীয় প্রশাসন।
দাতেনওয়াদা একটি উপজাতীয় এলাকা। এখানে প্রচুর খনিজ সম্পদ আছে যার বেশির ভাগই লোহার আকরিক। তবে এলাকাটিতে বহুবার নকশালদের হামলা হয়েছে। ২০১০ সালে নকশালদের ভয়াবহ হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর ৭৬ সদস্য নিহত হন।