ঘূর্ণিঝড়ে দক্ষিণ হাইতির ৯০ শতাংশ ধ্বংস
ঘূর্ণিঝড় ম্যাথিউর আঘাতে ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ হাইতির দক্ষিণাঞ্চল ৯০ শতাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ এই ঘূর্ণিঝড়ে হাইতিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৯০০। মানবিক সহায়তা সংস্থার কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হাইতির অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো উদ্ধারকারীরা পৌঁছাতে পারেননি। সেসব স্থানে উদ্ধার অভিযানের পর নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মানবিক সহায়তা সংস্থার কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেন, দক্ষিণ হাইতি ‘সম্পূর্ণ ধ্বংসে’র মুখে পড়েছিল।
হাইতির সরকার জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ম্যাথিউর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত শুধু হাইতির রোচে-এ-বাতেয়ু উপদ্বীপের মূল শহর জেরেমির ৮০ শতাংশ ভবন ধসে পড়েছে। সাদ শহরের ৩০ হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে।
গত মঙ্গলবার হাইতি ও কিউবায় আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ম্যাথিউর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গত সোম ও মঙ্গলবার ভারি বর্ষণ হয়। এ বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় হাইতির দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু ভেঙে যাওয়ায় দুর্যোগপীড়িত অনেক অঞ্চলে সাহায্য পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।
ঘূর্ণিঝড় ম্যাথিউ ক্যারিবীয় অঞ্চল পার হওয়ার পর চার মাত্রার ঝড়ে রূপ নেয়, যা ঘূর্ণিঝড় হিসেবে দ্বিতীয় শ্রেণির। ঝড়টি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের দিকে ধাবিত হয়। পরে এটি দ্বিতীয় মাত্রার ঝড়ের রূপ নেয় এবং ঘণ্টায় ১৭৭ কিলোমিটার বেগে এটি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের দিকে ধাবিত হয়। পরে এটি সাউথ ক্যারোলাইনায় আঘাত হানে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানায়, ‘ক্যাটাগরি ওয়ান’ ঘূর্ণিঝড়রূপে এটি আঘাত হেনেছে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার।
এর আগে আবহাওয়ার খবরে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ম্যাথিউ গত এক দশকের মধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়। হাইতি ও কিউবার ওপর দিয়ে এটি বয়ে যায়।
ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইতির দক্ষিণ উপকূলের শহর ও মৎস্যজীবীদের গ্রাম। গাছের চাপা, উড়ে আসা ভাঙা টুকরোর আঘাত ও পানিতে ডুবে অনেকের মৃত্যু হয়েছে।
হাইতির সরকার জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে অনেক অঞ্চলে মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।