২৪টি চীন-ভারত চুক্তি সই
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তিনদিনের চীন সফরের দ্বিতীয় দিনে আজ শুক্রবার দেশ দুটির মধ্যে ২৪টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষা, রেল, অভ্যন্তরীণ খনিজ উত্তোলনসহ বিভিন্ন বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার আশ্বাসবিষয়ক চুক্তি। চুক্তিগুলোর আওতায় দুই দেশের মধ্যে প্রায় ৮০ হাজার কোটি রুপি লেনদেন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব পিপলে শুক্রবার নরেন্দ্র মোদি আর চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং চুক্তিগুলোতে স্বাক্ষর করেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, চুক্তিগুলোর মধ্যে ভারতের কাছে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ছিল নৌ-বহর ও সমুদ্রবিজ্ঞান চুক্তি।
চুক্তি সই করার পর চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মোদি বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্কে এবং এ থেকে সেরাটা বের করে আনার ঐতিহাসিক দায়িত্ব এখন আমাদের কাঁধে। সীমান্তে শান্তি রক্ষা করতে দুই পক্ষই সমান দায়বদ্ধ। অতীতে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবেশী হিসেবে কিছু সমস্যা হলেও এখন আমরা উভয়েই একে অপরের প্রতি সংবেদনশীল।’
মোদি আরো বলেন, ‘আমরা কিছু প্রাদেশিক সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেছি। পারস্পরিক বিশ্বাস আরো শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। ভিসা সমস্যা ও সীমান্তের নদী নিয়েও কথা এগিয়েছে।’
অপরদিকে লি কেকিয়াং বলেন, ‘চীন-ভারতের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরো কৌশলগতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই কাজ করছি আমরা।’
চীনের প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘ভারত-চীনের মধ্যকার সম্পর্কের নতুন দিকের সূচনা করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।’
আজ শুক্রবার বিকেলে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সাথে দ্বিতীয়বারের মতো দেখা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সাক্ষাৎকালে মোদিকে জিনপিং বলেন, ‘মতপার্থক্যগুলো নিয়ন্ত্রণে রেখে, সহযোগিতাকে বৃদ্ধি করে এশিয়ার দুই শক্তিধর দেশ একসঙ্গে এগিয়ে যাবে।’ এর আগে সফরের প্রথম দিন গত বৃহস্পতিবার এক ঘরোয়া আলাপে জিনপিং মোদিকে বলেছিলেন, ‘ভারত ও চীন ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় বিতর্কিত ইস্যুগুলোয় ছাড় দেবে, পরস্পরের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ইস্যুতে অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ করবে না। আর এভাবেই বিগত কয়েক দশকের অবিশ্বাস আর অনাস্থার ইতিহাস মুছে দিয়ে আর্থসামাজিক উৎকর্ষের চূড়া ছোঁবে দুই দেশ।’
দুই দেশের সম্পর্কে এই নতুন উষ্ণতার ছোঁয়া লেগেছে কঠোরভাবে সরকারনিয়ন্ত্রিত চীনের সংবাদমাধ্যমগুলোতেও। চীনে ক্ষমতাসীন সমাজতান্ত্রিক দলের মুখপত্র পিপলস ডেইলি আজ শুক্রবার তাঁদের সম্পাদকীয়তে লিখেছে, চীন ও ভারতের মিত্রতাকে পশ্চিমা এবং তাঁদের কূটনীতিকরা ভালো চোখে দেখে না। বরং সন্দেহের চোখে দেখে এবং এই মিত্রতাকে তারা ভয় পায়। কারণ এই দুই দেশ যদি নীতিগতভাবে একমত হয় তাহলে এশিয়াকে ভবিষ্যতে শাসন এবং শোষণের জন্য তারা যে ছক এঁকে রেখেছিল, তা বাস্তবায়িত হবে না।