২০০ বছর ধরে ধ্যানমগ্ন!
প্রায় ২০০ বছর ধরে ধ্যান করছেন তিনি। পদ্মাসনের বজ্রভঙ্গিতে ‘গভীর ধ্যানমগ্ন’ অবস্থায় গত ২৭ জানুয়ারি তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে মঙ্গোলিয়ার সঙ্গিনো খাইরখান প্রদেশ থেকে।
তিনি একজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী। সাইবেরিয়ান টাইমসের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, আড়াআড়ি পা রেখে পদ্মাসনে থাকা এবং পশুর চামড়া দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় তাঁকে পাওয়া গেছে। এ আসনে বসে থাকার অর্থ হলো, সন্ন্যাসী এখন ধ্যানের গভীর পর্যায়ে আছেন। প্রায় ২০০ বছর পর তাঁকে পাওয়া গেলেও শরীরে ধরেনি পচন।
দালাইলামার চিকিৎসক এবং বিখ্যাত বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ডা. ব্যারি কেরজিন বিশ্বাস করেন, উদ্ধার করা ওই সন্ন্যাসী সম্ভবত ধ্যানের গভীরতম পর্যায় ‘তুকদামে’ পৌঁছে গিয়েছিলেন। সাধারণত এমন কম দেখা যায়, তবু কোনো ব্যক্তি যদি টানা তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ধ্যানের এই পর্যায়ে অবস্থান করেন, তাহলে তাঁর শরীর ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে যেতে থাকে। এরপর পর্যায়ক্রমে তার চুল, নখ এবং কাপড় ছাড়া আর কিছুই থাকে না। সাধারণত এমন সময়ে এই সন্ন্যাসীর পাশে যে ব্যক্তি থাকেন, তিনি কয়েকদিন ধরে আকাশে রংধনু দেখতে পান। এর মানে তিনি একটি রঙিন শরীর খুঁজে পেয়েছেন। এই পর্যায়কে গৌতম বুদ্ধের কাছাকাছি যাওয়ার সর্বোচ্চ পর্যায় বলে মনে করেন ডা. কেরজিন।
এই ধ্যানমগ্ন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ১২তম পণ্ডিত হামবো লামা দাশি দরঝো ইটিগিলভ-এর (১৮৫২-১৯২৭) শিক্ষক বলে মনে করা হচ্ছে। দাশি দরঝোর শরীরও প্রায় একই ভঙ্গিতে মমি করা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। দাশি দরঝো তাঁর অনুসারীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন যেন মৃত্যুর ৩০ বছর পর তাঁর মৃতদেহ তোলা হয়। এরপর পদ্মাসনে থাকা অবস্থাতেই তাঁর দেহ খুঁজে পান অনুসারীরা।
মঙ্গোলিয়ার স্থানীয় পত্রিকার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কোবস্ক প্রদেশে একটি গুহার মধ্যে এই বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর মমি করা দেহটি খুঁজে পান এক ব্যক্তি। তখন তিনি তা উলান বাটোরে তাঁর নিজের বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন। এন্থর নামের ওই ব্যক্তি মমিটি চোরাবাজারে বিক্রির পরিকল্পনা করার সময় স্থানীয় পুলিশ বিভাগ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। দেশটির আইন অনুযায়ী, জাতীয় ঐতিহ্য চুরি করে বিক্রির দায়ে এন্থরের পাঁচ থেকে ১২ বছরের জেল অথবা ৪৩ হাজার ডলার জরিমানা হতে পারে।
সন্ন্যাসীর মমি করা দেহটি এখন মঙ্গোলিয়ার জাতীয় ফরেনসিক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।