প্লাস্টিক শিশু!
ভারতের পাঞ্জাবের অমৃতসরে এক নারী জন্ম দিয়েছেন একটি কলোডিয়ন শিশুকন্যা। গত দুই বছরে অমৃতসরে এটি দ্বিতীয় ঘটনা।
কলোডিয়ন শিশু জন্ম নেয় খুবই কষা, মোমের মতো চকচকে ত্বক নিয়ে, অনেকটা প্লাস্টিকের মতো। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, এটিকে বলা হয় কলোডিয়ান মেমব্রেন। এটি খুবই বিরল ঘটনা। প্রতি ছয় লাখ শিশুর মধ্যে এমন একটি শিশুর জন্মের সম্ভাবনা থাকে।
এমন শিশুর মুখ অনেকটা মাছের মতো দেখতে। চোখ ও ঠোঁট থাকে টুকটুকে লাল। চিকিৎসকরা জানান, এটা এক ধরনের বিরল জিনগত ত্রুটি।
জি নিউজ তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত ৮ মে অমৃতসরের গুরু নানক দেব হাসপাতালে শিশুটির জন্ম হয়। হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, যখনই শিশুটিকে কেউ ছোঁয়, তখনই সে কাঁদতে শুরু করে। মায়ের বুকের দুধ চুষে খেতেও পারছে না সে। ১১ মে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
২০১৪ সালেও অমৃতসরে এমন একটি শিশুর জন্ম হয়। কয়েক দিন পরেই শিশুটি মারা যায়। চিকিৎসকরা জানান, এ ধরনের শিশুর ত্বকের অবস্থা হয় খুবই যন্ত্রণাদায়ক। এদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম, মাত্র ১৫ থেকে ২০ শতাংশ।
গুরু নানক দেব হাসপাতালের যে চিকিৎসক শিশুটির চিকিৎসা করেছেন তিনি জানান, জিনগত একধরনের সমস্যার কারণে এবং একধরনের প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যের কারণে এই সমস্যা হয়। এই বৈশিষ্ট্য পরিবারের যে কারো জিনের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে আসতে পারে। এই ধরনের সমস্যা হলে ত্বক আঁশযুক্ত হয়। চিকিৎসকরা বলেন, ‘শিশুটির ত্বক পুরু, যদিও এই ধরনের অন্য শিশুদের ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে এই ত্বক খসে যায় এবং স্বাভাবিক ত্বক পাওয়া যায়। তবে এই প্রক্রিয়াটি খুবই যন্ত্রণাদায়ক।’ কলোডিয়ন শিশুরা স্বাধারণত অপরিপক্ব হয়ে জন্ম নেয় বলেও জানান তাঁরা।
চিকিৎসকরা জানান, এই পুরু ত্বক শিশুকে শুধু রাবারের মতো শক্ত চেহারাই দেয় না বরং শিশুর মায়ের জন্য তাকে দুধ পান করানোও কঠিন করে দেয়।
এই ধরনের ত্বক নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুরা সংক্রমণের স্থায়ী ঝুঁকির মধ্যে থাকে বলে জানিয়েছেন শহরটির চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া এই শিশুদের শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক রকমের কম থাকে এবং তারা পানিশূন্যতাতেও ভোগে।
তবে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে যত্ন নিলে এবং আর্দ্র ইনকিউবেটরে রেখে চিকিৎসা চালিয়ে গেলে এ ধরনের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।