অভিবাসীদের ত্রাণসংকটে ইন্দোনেশিয়া
বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা অভিবাসীদের জন্য খাদ্যসংকটে পড়েছে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। গত কয়েকদিনে ডুবন্ত নৌযান থেকে উদ্ধার করে প্রায় দেড় হাজার অভিবাসীকে দেশটির আচেহ প্রদেশে বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে রাখা হয়েছে। আজ সোমবার কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের ত্রাণ সরবরাহ কমে গেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, নির্যাতন ও দারিদ্র্য সইতে না পেরে হাজার হাজার মানুষ মিয়ানমার ও বাংলাদেশ ছেড়ে পালাচ্ছে। এদের অনেকেই এখনো গভীর সমুদ্রে আটকে আছে। এই পরিস্থিতিতে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া কোনো দেশই তাদের ভিড়তে দিচ্ছে না। অবশ্য অভিবাসীদের খাবার ও পানীয় সরবরাহ করছে দেশগুলো। এমনকি মিয়ানমারও জানিয়ে দিয়েছে, অভিবাসী সংকটের দায় তারা নেবে না।
অভিবাসীদের বেশিরভাগই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ায় যেতে এজন্য মানব পাচারকারীদের অর্থও দিয়েছে।
তবে মালয়েশিয়া জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে তারা বেশ কয়েক হাজার অভিবাসীকে আশ্রয় দিয়েছে। এখন তাদের পক্ষে এর চেয়ে বেশি লোকজনকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়।
আগামী বুধবার তিন দেশের কর্মকর্তারা অভিবাসী সমস্যা নিয়ে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন। তবে মিয়ানমার এতে যোগ না দিতে পারে বলে জানিয়েছে। তবে অন্য দেশগুলো বলছে, অভিবাসীদের পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে মিয়ানমারকে ভূমিকা পালন করতে হবে।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাস করে। তবে তাঁদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না দেশটির সরকার। কয়েক দশক ধরে তাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে।
মানবাধিকারবিষয়ক বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে, পালানো ছাড়া অভিবাসীদের আর কোনো উপায় থাকে না। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত তিন বছরে এক লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়েছে।
পাচারকারীরা প্রথমে অভিবাসীদের থাইল্যান্ডে নেয়, পরে মালয়েশিয়ায় ছেড়ে দেয়।
এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার বন্দরনগরী লাংসায় অস্থায়ী ক্যাম্পে রাখা ওই সব অভিবাসীর সঙ্গে কথা বলে বিবিসি জানায়, খাবার নিয়ে সংঘর্ষে একটি নৌকাতেই অন্তত ১০০ লোক মারা যায়। এদের কাউকে কাউকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়, কাউকে গলায় রশি পেঁচিয়ে মারা হয়। আবার কাউকে কাউকে নৌকা থেকে সাগরে ছুঁড়ে ফেলা হয়।
লাংসার মেয়র জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য রাখা তহবিল তাঁদের খরচ করতে হচ্ছে।তিনি বলেন, ‘আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। আচেহ প্রদেশে বিদেশিদের কাছ থেকে সহায়তা এসেছে। আমরা একইভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি।’