বাংলা-ভারত সীমান্ত বন্ধের দাবি আরএসএসের
স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের পর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)। ভারতে অনুপ্রবেশ বন্ধে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের অন্যতম শক্তি এমন দাবি জানিয়েছে।
আরএসএসের মুখপত্র ‘অর্গানাইজার’ সাপ্তাহিকীর সর্বশেষ সংখ্যার সম্পাদকীয় এসব দাবি জানানো হয়। এতে বলা হয়, ভারতের পার্লামেন্টে ঐতিহাসিক ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তি বিলের অনুমোদনকে তারা স্বাগত জানায়। তবে চুক্তি বাস্তবায়নের পর সংগঠনটি বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ বন্ধ চায়। সংগঠনটি মনে করে, অনুপ্রবেশ বন্ধ না হলে ভারতের পূর্ব সীমান্তেও জম্মু ও কাশ্মীরের মতো অবস্থা সৃষ্টি হবে।
বিজেপির পরামর্শক সংগঠন হিসেবে পরিচিত আরএসএসের মতে, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের কারণে ভারতের জনসংখ্যার ওপর প্রভাব পড়ে। একই সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তায়ও সমস্যা তৈরি হয়।
আরএসএস জানায়, অনুপ্রবেশের কারণে সৃষ্ট জনসংখ্যার পরিবর্তনের প্রভাব পড়ে ভোটের সময়। সংগঠনটি অভিযোগ করে, পূর্ববর্তী সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেস—উভয় দলই অনুপ্রবেশের ব্যাপারে উদাসীন। আরএসএসের দাবি, প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশি ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করছে। বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের উদ্বাস্তু হিসেবে ধরা হলেও মুসলমানদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবেই মনে করে আরএসএস।
বাংলাদেশে ‘জঙ্গিবাদে’র ব্যাপারটি উল্লেখ করে আরএসএস দাবি করে, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ দমন অথবা পাকিস্তানের পথে যাওয়া—যাই ঘটুক না কেন, অবশ্যই ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের জঙ্গিবাদকে স্থান দেওয়া যাবে না।
আরএসএস মনে করে, আসাম এবং মেঘালয় ও পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশে বিভিন্ন সংঘর্ষের মূল কারণ বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারী। পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের ওপর মুসলমানদের হামলার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আরএসএস। তাদের দাবি, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে হিন্দুরা হামলার শিকার হয়। বর্ধমানের বিস্ফোরণের ঘটনা নিরাপত্তার বড় সমস্যাকেই ইঙ্গিত করে।
‘অর্গানাইজারে’র অপর একটি নিবন্ধে আরএসএস জানায়, কংগ্রেসের ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভোটের রাজনীতি, কমিউনিস্টদের এটি লালনপালন আর বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেসের এটি ধারণের ফলে বাংলা অঞ্চলে ইসলামিক মৌলবাদকে গতিশীল করেছে।
আরএসএস দাবি করে, নদীয়ায় রায়টের ঘটনা পূর্ব সীমান্তে হিন্দুদের অবস্থাকেই তুলে ধরে। বাংলাদেশের হিন্দুদের সংখ্যা কমে যাওয়ার ব্যাপারেও সংগঠনটি উদ্বেগ প্রকাশ করে। তারা দাবি করে, ধীরে ধীরে বাংলাদেশ থেকে হিন্দু সম্প্রদায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।
আরএসএস দাবি করে, ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিক, শিক্ষক ও সংবাদমাধ্যম কানা ও বধিরের মতো হিন্দুদের ওপর হামলাকে বর্ণ ও শ্রেণিসংঘাত বলে ব্যাখ্যা দেয়। বিষয়টির নিন্দা জানিয়ে তারা জানায়, এখন সত্য বলার সময় এসেছে।