ভারতে হিন্দু জাতীয়তাবাদের উত্থানে সংখ্যালঘুরা শঙ্কিত
ভারতে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর হারও। এর ফলে হিন্দু জাতীয়তাবাদের উত্থান নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ।
এরই মধ্যে সম্প্রতি রাজধানী নয়াদিল্লির ক্যাথলিক চার্চগুলোয় সিরিজ হামলা এই শঙ্কাকে বাড়িয়েছে। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসব বড়দিন বানচালের লক্ষ্যে গত ডিসেম্বর থেকে দিল্লির চার্চগুলোতে পাঁচটি হামলা হয়েছে। সর্বশেষ ২ ফেব্রুয়ারি সেন্ট আলফোনসা ক্যাথলিক চার্চে হামলা হয়।
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম এবিসি জানিয়েছে, সেন্ট আলফোনসা ক্যাথলিক চার্চে একদল দুষ্কৃতকারী হামলা চালায়। এতে ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি অনেক কিছু জিনিস খোয়া গেছে। পুলিশ একে ডাকাতির ঘটনা বলছে। চার্চের নেতাদের দাবি, এটি হিন্দু মৌলবাদীদের কাজ।
দিল্লির ক্যাথলিক ইউনিয়নে মুখপাত্র ফাদার ডোমিনিক ইমানুয়েল বলেন, ‘ভারতের পরিস্থিতি খ্রিস্টান ও মুসলমানদের জন্য খুব খারাপ। বড় উদ্বেগের বিষয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রীর নাকের ডগায়ই এসব ঘটছে।’
ফাদার ইমানুয়েল দাবি করেন, সব হামলার সঙ্গেই ডানপন্থী হিন্দু মৌলবাদীরা জড়িত। গত বছরের নির্বাচনে বিজেপি জয়লাভ করার পর তারা শক্তি ও সাহস সঞ্চয় করেছে। মোদির দল বিজেপির শেকড় হিন্দু মৌলবাদী দল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, আরএসএস অন্য সংখ্যালঘুদের জোরপূর্বক ধর্মান্তর করার চেষ্টা করছে।
২৫ ডিসেম্বরকে গুড গভর্নেন্স ডে হিসেবে ঘোষণা করে মোদি সরকার ক্রিসমাস ডে-কে ছোট করে দেখাচ্ছে মন্তব্য করেন ফাদার ইমানুয়েল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির জন্মদিন ২৫ ডিসেম্বরকে গুড গভর্নেন্স ডে হিসেবে ঘোষণা করেছেন মোদি।
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে হামলার প্রতিবাদে খ্রিস্টান নেতারা বিক্ষোভ করেছেন। সমালোচকদের অভিযোগ, মোদি এসব হামলার ঘটনায় বরাবরই নীরব।
২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গা বন্ধে কেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কোনো ইতিবাচক ভূমিকা নেননি বলে অভিযোগ আছে। ওই দাঙ্গায় নারী ও শিশুসহ দুই হাজারের বেশি মুসলিম নিহত হয়।