পুতিনের বিমানকে তাড়া করল সুইস যুদ্ধবিমান
সুইজারল্যান্ডের আকাশসীমা দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ব্যক্তিগত বিমানবহরের একটি উড়োজাহাজ। দেশটির আন্তর্জাতিক আকাশসীমা ব্যবহারের আগে বিধিমতোই নেওয়া হয়েছিল যাবতীয় অনুমতি। কিন্তু যেই রাশিয়ার বিমানটি সুইস আকাশসীমায় ঢুকেছে, অমনি বিমানটির দিকে তেড়ে এলো তিনটি যুদ্ধবিমান।
শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের আকাশসীমায় এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট। প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, বিমানটিতে তখন প্রেসিডেন্ট নিজে ছিলেন না। তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে গিয়েছিলেন একটি আঞ্চলিক সম্মেলনে অংশ নিতে। রাশিয়ার সাংবাদিক প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ছিলেন ওই বিমানে। তাঁরা প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত বিমানবহরে করে ওই সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন।
এই ঘটনা রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রতি পুরো ইউরোপের শত্রুতাভাবাপন্ন আচরণকে আরো স্পষ্ট করল বলে মন্তব্য করেছে দ্য ইনডিপেনডেন্ট। এদিকে কোনো প্রকার উসকানি বা ঘটনা ছাড়া এভাবে রুশ বিমানের দিকে সুইস যুদ্ধবিমানের তাড়া করে আসা আন্তর্জাতিক শিষ্টাচারের লঙ্ঘন বলে বর্ণনা করেছে পুতিনের নিরাপত্তা বাহিনীর মুখপাত্র।
ওই বিমানে থাকা এক যাত্রী আকাশে ঘটে যাওয়া ঘটনাটির কিছু অংশ তাঁর মোবাইল ফোনে ধারণ করেছিলেন। আর ওই ভিডিওটি প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমগুলো। ভিডিওতে দেখা গেছে, যুদ্ধবিমানগুলো রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমানের খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল।
রাশিয়ার খ্যাতনামা ম্যাগাজিন রাশিয়ান পাইওনিয়ারের সম্পাদক আন্দ্রে কোলেনিস্কভ ছিলেন ওই বিমানটিতে। ফেসবুকে এই সাংবাদিক লিখেন, আমরা তখন সুইজারল্যান্ডের আকাশসীমা দিয়ে উড়ছিলাম। হঠাৎ কোনো ঘোষণা ছাড়াই আমাদের দিকে তেড়ে এলো তিনটি যুদ্ধবিমান। এতটাই কাছ দিয়ে উড়ছিল বিমানগুলো যে আমরা সুইস বিমানের পাইলটদের মুখ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম।
আন্দ্রে কোলেনিস্কভ আরো লিখেন, হঠাৎ এই ঘটনায় আমরা সবাই রীতিমতো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তিনদিক থেকে তিনটি বিমান এসে আমাদের বিমানটিকে যেন আকাশে বন্দি করে ফেলেছিল। এতটা কাছ দিয়ে ওড়া যে রীতিমতো খুবই দক্ষ বৈমানিকও ভয় পেয়ে যাবেন। সময়ের হিসেবের একটু এদিক ওদিক হলেই যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। কিছুক্ষণ পরে অবশ্য বিমানগুলো উড়ে চলে যায়।
এমন এক সময়ে ঘটনাটি ঘটল যখন পুরো ইউরোপের সঙ্গে পুতিনের বিরোধ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মাত্র গতকালই পুতিন ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র মাত্র ১৩ মিনিটে যুক্তরাজ্যে আঘাত হানতে পারে।
এ ছাড়া পুতিনের নেতৃত্বে রাশিয়ার সেনারা যখন সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে তখন ইউরোপের বেশির ভাগ দেশের সমন্বয়ে গঠিত সামরিক জোট ন্যাটোর সেনারা বাশার আল আসাদের পক্ষালম্বন করে প্রায় নিষ্ক্রিয় অবস্থানে রয়েছে।