সমুদ্রপাড়ের গোপন ঘাঁটিতে পাকিস্তানের ১৪০টি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র!
পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত-পাকিস্তানের দ্বৈরথের খবর অনেক পুরোনো। সেই দ্বৈরথের মহড়ায় আশি নব্বইয়ে দশকে পরমাণু অস্ত্র বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় নামে দেশ দুটি।
সেই শক্তি প্রদর্শনের মহড়ার রেশ চলছে আজও। এর মধ্যে আবার ‘বিশ্বশান্তি’ রক্ষায় জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন কমিটি পরমাণু অস্ত্র বাড়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশ দুটির ওপর। এরপর অনেকটাই কমে যায় পারমাণবিক অস্ত্রের ঝনঝনানি।
কিন্তু পাকিস্তানের প্রতিবেশী ভারত বহুদিন ধরেই দাবি করে আসছিল, গোপনে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে দেশটি। যার পক্ষে সায় দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ) ও দেশটির মহাকাশবিষয়ক সংস্থা (নাসার) বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক সময়ে চালানো এক যৌথ প্রতিবেদন।
উপগ্রহে পাওয়া চিত্র ও অন্যান্য তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মার্কিন ওই গবেষক দল জানিয়েছে, সমুদ্রপাড়ের ১০টি গোপন ঘাঁটিতে অন্তত ১৪০টি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ করেছে পাকিস্তান। এ ছাড়া পরমাণু অস্ত্রের বিষয়ে মার্কিন নির্দেশনা উপেক্ষা করে এফ-১৬ জঙ্গি বিমান ও মিরেজ বিমানগুলোকে ক্ষেপণাস্ত্র বহনক্ষম করে তুলছে পাকিস্তান। প্রতিবেদনে পাকিস্তানের সমুদ্রতীরবর্তী করাচির মাশরুর বিমানঘাঁটিকে সন্দেহজনক স্থাপনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে একটি ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী বিমানগুলোকে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ওই প্রতিবেদন।
এ ছাড়া পাকিস্তানের করাচি, পাঞ্জাব, সিন্ধু ও বেলুচিস্তানে বিভিন্ন মিসাইল গ্যারিসন ও বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাখা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। পাকিস্তান যেসব জায়গায় পরমাণু অস্ত্র মজুদ করেছে বলে দাবি করা হয়েছে সেগুলো হলো করাচির মাসরুর, সিন্ধুপ্রদেশের আক্রা, পঞ্জাবের গুজরানওয়ালা, বেলুচিস্তানের খুজদার, সিন্ধুপ্রদেশের আকিল ও সারগোদা সেনাঘাঁটি। এই ঘাঁটিগুলোর বেশির ভাগই সমুদ্রতীরবর্তী স্থানে অবস্থিত বলে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়।
বিজ্ঞানীদের বক্তব্য নিয়ে গত সপ্তাহে ‘বুলেটিন অব অ্যাটমিক সায়েন্টিস্ট’ ম্যাগাজিনে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে মার্কিন গবেষকরা জানিয়েছেন, এত দিন মনে করা হচ্ছিল ভূমি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধাজাহাজ থেকেই পরমাণু অস্ত্র ছুড়তে পারে পাকিস্তান। কিন্তু ইসলামাবাদ এখন এফ-১৬ বিমানের নকশা কিছুটা বদল করে তাকে পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম করে তুলেছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের হাতে রয়েছে কিছু পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম গাড়ি। ওই সব গাড়ি থেকেও স্বল্প ও দূরপাল্লার পরমাণু অস্ত্র ছোড়া যাবে।