কাস্ত্রো যাঁকে জেলে ভরেছিলেন, প্রশংসা পেলেন তাঁর
কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো আর নেই। কিউবার রাজধানী হাভানায় গত শুক্রবার শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন এই নেতা। দীর্ঘ বিপ্লবী জীবনে কাস্ত্রোর তো শত্রু-মিত্রের অভাব ছিল না। তাই তাঁর মৃত্যুতে যেমন শোকের ছায়া নেমে এসেছে, তেমনি আনন্দ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
তবে এমন কেউ শোক প্রকাশ করেছেন, যাঁকে কিনা কারাদণ্ড দিয়েছিলেন কাস্ত্রো! একটু অন্যরকম শোনায় কথাটি। মার্কিন সাংবাদিক হেনরি রেমন্ট এমনই একজন।
শুক্রবার ফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যু সংবাদ শোনার পর রেমন্ট তাঁর স্মৃতির পাতা থেকে তুলে ধরেন কিছু গল্প। ৫০ বছরের পুরোনো সেই গল্পে ছিল কাস্ত্রোর সঙ্গে তাঁর কাটানো কিছু সময়ের কথা। এমনকি সে সময় কাস্ত্রোর নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল, এ কথাও বলেছেন তিনি। এসব কথা বলতে বলতে তাঁর মুখে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া।
রেমন্ট বলেন, তিনি আটবার কাস্ত্রোর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। এ ছাড়া বেশ কিছুদিন একসঙ্গে কাটিয়েছিলেন। সে সময় ক্যারিবীয় অঞ্চলে কাস্ত্রোর সঙ্গে জিপে করে ঘুরতে বের হতেন। বেড়াতে যেতেন তাঁর রিসোর্টে। সেখানে গিয়ে মদের পাত্র হাতে ও সিগারেটের ধোঁয়ায় সময় কাটাতেন একসঙ্গে।
রেমন্ট শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘আজকের খবরে আমি খুবই শোকাহত। আমার দেখা তিনি একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাঁর অসাধারণ রসবোধ ছিল।’
হেনরি রেমন্ট বলেন, ‘কাস্ত্রো আমাকে একজন বন্ধু সাংবাদিকের মতই দেখেছিলেন।’ ‘সঙ্গে এটাও ঠিক যে আমাকে কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছিল।’
ঘটনাটি ঘটে ১৯৬১ সালের এপ্রিলের ১৭ তারিখে। সে সময় আলোচিত ‘বে অব পিগস’ ঘটনার ওপরে প্রতিবেদন তৈরি করতে রেমন্ট অবস্থান করছিলেন কিউবার রাজধানী হাভানায়।
একদিন রেমন্ট শুনতে পেলেন তাঁর দরজায় কেউ আঘাত করছে। দরজা খোলার পর বন্দুকের মুখে তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় কিউবার সেনা গোয়েন্দার প্রধান কার্যালয়ে। তারপর কারাদণ্ড। তাঁদের সন্দেহ রেমন্ট একজন গুপ্তচর। তবে এর আগেই তিনি নিউইয়র্কে তাঁর নিউজ রুমে জানিয়েছিলেন, শিগগিরই তাঁর ওপর আক্রমণ হতে পারে।
যদিও রেমন্টকে বেশিদিন কারাগারে থাকতে হয়নি। সাংবাদিকদের আবেদনের ভিত্তিতে আটকের ছয়দিন পরেই তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু এই ছয়দিনে তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয় গুপ্তচরবৃত্তিসহ নানা অভিযোগ। এমনকি মৃত্যুদণ্ডেরও হুমকি দেওয়া হয় রেমন্টকে।