বিক্ষোভের মুখে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের ঘোষণা
অব্যাহত বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গিউন হে। পদত্যাগের জন্য তিনি দেশটির পার্লামেন্টের সহায়তা চেয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অবস্থান করা বিবিসির সংবাদদাতা স্টিভ ইভানস জানা, তাঁর (পার্ক) এই পদত্যাগের ঘোষণা মানেই কিন্তু পদত্যাগ নয়। এটি বরং পদত্যাগ করার প্রস্তাব। তবে এটা পরোক্ষভাবে জানিয়ে দেওয়া হলো যে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে তাঁর সময় ফুরিয়ে এসেছে।
প্রেসিডেন্ট পার্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য তিনি পুরোনো এক বন্ধুকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার সুযোগ দিয়েছেন। এ অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তও চলছে। আর এই তদন্ত চলাকালে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলে।
টেলিভিশনের এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট পার্ক তাঁর মেয়াদ কমানোসহ ভবিষ্যতের সবকিছু পার্লামেন্টের হাতে ছেড়ে দেন। আগামী শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্টে পার্ককে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রস্তাব ওঠানোর কথা রয়েছে।
কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশের পর এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো টেলিভিশনে ভাষণ দিলেন পার্ক গিউন হে। এই ভাষণে তিনি বলেন, দেশের ক্ষমতায় শূন্যতা এবং নৈরাজ্য সৃষ্টি হওয়ার বিষয়ে পার্লামেন্ট পদক্ষেপ নিলেই তিনি ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন। এর আগের দুবারের ভাষণে তিনি কেলেঙ্কারির জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছিলেন, ‘তাঁর মন ভেঙে গেছে’। তবে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন তিনি।
পার্কের বন্ধু ছই সুন-সিল অনেক অভিযোগ মাথায় নিয়ে বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশের হেফাজতে আছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে হুমকি দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় এবং দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ব্যবহার করে অলাভজনক তহবিলে অর্থ আদায়ের চেষ্টার অভিযোগ আছে এই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।
এদিকে এই ঘটনার তদন্তকারীদের মতে, ছইয়ের এই দুর্নীতিগুলোর সঙ্গে পার্কের ‘আমলে নেওয়ার মতো’ সম্পৃক্ততা ছিল। আর এ জন্য গত কয়েক সপ্তাহে পার্ক গিউন হে এর বিরুদ্ধে সারা দেশজুড়ে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নেয়।
এর আগে জনরোষ কমাতে প্রেসিডেন্ট পার্ক বিরোধী দলের সঙ্গে মিলে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন ও কিছু ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন । কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। বরং প্রধান বিরোধী দলের সদস্যরাও বিক্ষোভে অংশ নিয়ে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন।