সরকারকে বিশ্বের দেড়শ লেখকের খোলা চিঠি
বাংলাদেশে ব্লগার হত্যার বিচার দাবিতে মার্গারেট অ্যাটউড, ইয়ান মেনটেল, সালমান রুশদিসহ বিশ্বের ১৫০ জন লেখক খোলা চিঠি লেখেছেন। বাংলাদেশের সরকারকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠিতে হত্যাকারীদের বিচারের সম্মুখীন করে মতপ্রকাশের অধিকার রক্ষার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের কাছে পাঠানো চিঠিতে লেখকরা এই বছর বাংলাদেশের তিন ব্লগার হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন। গত তিন মাসের এই ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, এর নিশ্চয়তার জন্য তাঁরা বাংলাদেশের সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিন ব্লগারের হত্যাকারীদের বিচারের সম্মুখীন করতে বলেছেন বিশ্বখ্যাত লেখকরা।
ইমেইলে গার্ডিয়ানকে পাঠানো এক বার্তায় নোবেল বিজয়ী লেখক ইয়ান মেনটেল খোলা চিঠিতে অংশ নেওয়ার কারণ হিসেবে বলেন, ব্লগার হত্যার ঘটনা ভয়াবহ এবং এর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
ইয়ান মেনটেল আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, এই চিঠির মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার প্রভাবিত হবে। কারণ এটি কোনো পশ্চিমা সরকারের আবেদন নয়, যা দেশটির সরকার প্রায়ই পেয়ে থাকে। আমি আশা করি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের চিঠির মাধ্যমে তাদের (পশ্চিমা সরকার) চেয়ে বেশি প্রভাবিত হবেন।’
গার্ডিয়ানের কাছে পাঠানো চিঠিতে লেখকরা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে ব্লগার হত্যার ঘটনায় আটক করা হলেও হামলার জন্য দায়ী এমন কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
সর্বশেষ চলতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশে পঞ্চম বৃহত্তম শহর সিলেটে অনন্ত বিজয় দাস নামে এক ব্লগারকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বাসায় ফেরার পথে চারজন দুর্বৃত্ত তাঁকে ধাওয়া করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।
মুক্তমনা নামে একটি ব্লগে বিজ্ঞান ও বিবর্তন নিয়ে লেখালেখি করতেন অনন্ত বিজয় দাশ। ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম নিয়েও তাঁর লেখা আছে। জানা গেছে, অপর নিহত ব্লগার অভিজিৎ রায় ও তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যার ওপর হামলাকারীদের তালিকায় বিজয়ও ছিলেন।
২০০২ সালে মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় কিছুদিন আগেই রাজধানী ঢাকার বইমেলা থেকে ফেরার পথে হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন। একই সময় তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতর আহত হন। এর কিছুদিন পরই ওয়াসিকুর রহমান নামে অপর এক ব্লগারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
২০১৩ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত ছয়জন লেখক মৌলবাদীদের হামলার শিকার হন। বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করা ব্লগার ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনাকে উদ্বেগজনক মনে করেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এই লেখকরা।