সরকার পতনের বছরপূর্তিতে চুরি যাওয়া নিদর্শন ফেরত চায় শ্রীলঙ্কা সরকার
এক বছর আগে আজকের এই দিনে শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সঙ্কট সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিক্ষোভকারীরা দ্বীপদেশটির প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে তাণ্ডব চালায়। এ ঘটনার পর সে সময়কার লঙ্কান নেতা গোটাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালান। ওই হামলায় প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস থেকে লুট হয়ে যায় অনেক মূল্যবান শিল্পকর্ম ও নিদর্শন। আজ রোববার (৯ জুলাই) সরকার পতনের বছরপূর্তিতে দেশটির বর্তমান সরকার লুট হওয়া ওই সব শিল্পকর্ম ও নিদর্শন ফিরে পেতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে। খবর এএফপির।
বৃটিশ শাসন থেকে স্বাধীন হওয়ার পর সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে এক মাসের প্রতিবাদ বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ২০২২ সালের ৯ জুলাই কয়েক হাজার বিক্ষেুব্ধ জনতা হামলা চালায় প্রেসিডেন্টের ওই বাসভবনে।
আজ এক বিবৃতিতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংঘে লুটেরাদের এক মাসের সময় দিয়ে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘অনেক মূল্যবান শিল্পকর্ম ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ওই সময় হারিয়ে যায়। এর মধ্যে রয়েছে শ্রীলঙ্কার আগের প্রেসিডেন্ট ও গভর্নরদের দেওয়া বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতীক ও উপহার।’
সরকারি কর্মকর্তারা এসব রাষ্ট্রীয় প্রতীকের পাঁচটি ছবি প্রকাশ করেছে যার মধ্যে রয়েছে ১৬২২ সালের সপ্তম পর্তুগিজ গভর্নর জর্জ ডি আলবোকুয়ের্কের একটি প্রতীক যিনি ছিলেন সেময়কার দ্বীপরাষ্ট্রটির শাসক।
অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতীকের মধ্যে রয়েছে ১৯ ও ২০ শতকের বৃটিশ উপনিবেশিক শাসনামলের সময় দায়িত্ব পালনকারী কয়েকজন গভর্নরের দেওয়া উপহার।
বিক্ষুব্ধ জনতার হামলার ওই দিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন পোস্টে দেখা যায় লোকজন প্রেসিডেন্সিয়াল সুইমিংপুলে ঝাপাঝাপি করছে বা প্যালেসের বিছানায় উঠে লাফাচ্ছে। এর আগে পেছনের দরজা দিয়ে রাজাপাকসে পালিয়ে যান এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তারাও পিছিয়ে যায়। এ সময় মূল্যবান ওই শিল্পকর্ম ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সামনে দাঁড়িয়ে অনেককে সেলফি তুলতে দেখা যায়। ওই সময় রাজাপাকসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও আর্থিক কেলেঙ্কারীর অভিযোগ আনা হয়েছিল।
পুলিশ এসব ঘটনায় প্রেসিডেন্সিয়াল বিয়ার মগ নিয়ে বাড়িতে চলে যাওয়ায় এক ব্যক্তিকে এবং রাজাপাকসের পতাকা দিয়ে পোশাক ও বিছানার চাদর বানানোয় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে। ফেসবুকে ছবি পোস্ট করার পরপরই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
তাণ্ডবের ওই সময় রাজাপাকসের শোবার ঘর থেকে ছয় হাজার ডলার উদ্ধার করে পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে দেশটির আদালত পরে রাজাপাকসেকে কীভাবে ওই অর্থ তিনি উপার্জন করেছিলেন তা জানাতে আদেশ দেন।
এতোসব ঘটনার পর রাজাপাকসে পালিয়ে প্রথমে সিঙ্গাপুর ও পরে থাইল্যান্ডে যান। তবে বেশ কিছুদিন পরে কঠোর নিরাপত্তার ভেতরে তিনি দেশে ফিরে আসেন।