নেপালে পর্যটকবাহী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, ছয়জন নিহত
নেপালের এভারেস্ট অঞ্চলে পর্যটকবাহী একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১১ জুলাই) উড্ডয়নের কিছু সময় বাদে বিধ্বস্তের এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে অন্তত ছয় জন। দেশটির বিমান কর্তৃপক্ষের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি।
নিহতদের মধ্যে পাঁচজনই মেকিক্সোর পর্যটক। আর বাকিজন নেপালের। তিনি ওই হেলিকপ্টারটির পাইলট।
প্রতিবেদনে এএফপি জানিয়েছে, হেলিকপ্টারটি মানাং এয়ারের। বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট আরোহণের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত লুকলার থেকে রওনা দিয়ে রাজধানী কাঠমান্ডুর দিকে যাচ্ছিল হেলিকপ্টারটি। নেপালের বিমান কর্তৃপক্ষ সিএএএন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আজ সকালে উড্ডয়নের আট মিনিট পর আকাশযানটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মহা ব্যবস্থাপক প্রতাপ বাবু তিওয়ারি এএফপিকে বলেন, ‘বিধ্বস্ত হওয়া হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা হেলিকপ্টারের ছয় মরদেহ উদ্ধার করেছে।’
এএফপি জানিয়েছে, বিধ্বস্ত আকাশ যানটি অনুসন্ধানে দুটি হেলিকপ্টার ও একটি উদ্ধার টিম মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে, বৈরি আবহাওয়ায় দুর্ঘটনাস্থলের কাছাকাছি অবতরণ করতে পারেনি হেলিকপ্টার দুটি।
প্রতাপ বাবু তিওয়ারি বলেন, ‘মরদেহগুলো উদ্ধার করে সড়কপথের মাধ্যমে হেলিকপ্টারের কাছে আনা হয়। এরপর আকাশ পথে মরদেহগুলো কাঠমান্ডুতে নেওয়া হয়।’
উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া স্থানীয় বাসিন্দা লাকপা শেরফা বলেন, ‘দুর্ঘটনাস্থল ছিল বেশ ভয়াবহ। দেখে মনে হচ্ছে, হেলিকপ্টারটি আগে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এরপরেই মাটিতে ভূপাতিত হয়। ভূপাতিত হওয়ার স্থলে একটি গর্তের তৈরি হয়েছে।’
এদিকে, হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল।
নেপালে বেসরকারিভাবে পরিচালিত হেলিকপ্টার শিল্প বেশ এগিয়েছে। হিমালয়ের দেশটিতে পর্যটকদের চলাচলে আকাশযানটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তবে, দেশটি তার দুর্বল বিমান নিরাপত্তার জন্য কুখ্যাত। আর আজকের দুর্ঘটনাটি বিমান দুর্ঘটনার সর্বশেষ ঘটনা।
নেপালে বিমান দুর্ঘটনা অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। দেশটিতে দুর্গম রানওয়ে আর হঠাৎ পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার কারণে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়। হিমালয়ের কোলে অবস্থিত পাহাড়ি এলাকার এই ভূখণ্ডে বিমান চালনার কাজটি বেশ কঠিন।
২০২২ সালের মে মাসে নেপালের উত্তরাঞ্চলে তারা এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন ২২ জন। চার বছর আগে কাঠমান্ডু এয়ারপোর্টে অবতরণের সময় আগুন লেগে বাংলাদেশের একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্ত হলে ৫১ জন নিহত হন।