অবৈধ অভিবাসীদের কাজ বা আশ্রয় দিলে যুক্তরাজ্যে গুনতে হবে জরিমানা
ভালো ভবিষ্যতের আশায় প্রতিবছর অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায় হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী। ২০১৪ সালে এসব অবৈধ অভিবাসীদের কাজ বা আশ্রয় দানকারী ব্যক্তি কিংবা কোম্পানিকে জরিমানা করার আইন করেছিল দেশটি। এবার সেই আইনকে আরও কঠোর করার ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। রোববার (৬ আগস্ট) দেওয়া ঘোষণায় যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বাড়ি ভাড়া দেওয়া বা কাজ দেওয়া কোম্পানিকে অতিরিক্ত জরিমানা গুনতে হবে। মূলত, অবৈধ অভিবাসীদের রুখতেই এমনটি করছে দেশটির সরকার। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামী বছর যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনের আগে ছোট নৌকা দিয়ে অবৈধভাবে ইংলিশ চ্যানেল পার হয়ে আসা লোকদের রুখতে চায় দেশটির ক্ষমতাসীনরা। এর জেরেই ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘অবৈধ অভিবাসীদের এখানে আসার অন্যতম কারণ আশ্রয় ও কাজ পাওয়া। এ চিন্তা করেই অনেকে ঝুঁকিপূর্ণ সাগর পথ পাড়ি দেয়।’
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘অবৈধ অভিবাসীদের কাজ দিলে নিয়োগকর্তাদের জরিমানা আগের থেকে তিনগুণ বাড়িয়ে ৪৫ হাজার পাউন্ড (যুক্তরাজ্যের মুদ্রা) বা ৫৭ হাজার মার্কিন ডলার করা হয়েছে। প্রতি অবৈধ কর্মীর জন্য এই অঙ্কের জরিমানা গুনতে হবে নিয়োগকর্তাদের।
অবৈধ অভিবাসীদের বাড়িভাড়া প্রদানরীকে জরিমানা গুনতে হবে ১০ হাজার পাউন্ড। যা আগে ছিল মাত্র এক হাজার পাউন্ড।
একই অপরাধ বার বার করলে জরিমানার হার আরও বাড়বে বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আগামী বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালের প্রথম দিক থেকেই এই আইন কার্যকর হবে।
যুক্তরাজ্যের অভিবাসনমন্ত্রী রবার্ট জেনরিক বলেন, ‘অবৈধ অভিবাসীদের রুখতেই এমনটি করা হচ্ছে। তারা যেন জানতে পারে, এখানে এলে কাজ বা আশ্রয় পাওয়া যাবে না। তাহলেই ছোট নৌকা করে ইংলিশ চ্যানেলে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ কমবে।’
গত অক্টোবরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হন ঋষি সুনাক। অবৈধ অভিবাসীদের রুখতে বদ্ধ পরিকর তিনি। গত মাসে সুনাক সরকার একটি আইন পাস করেছে, যা জাতিসংঘ কর্তৃক সমালোচিত হয়েছে। ওই আইনে অবৈধ পথে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আশ্রয় দিতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের ভূখণ্ডে আসা অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জোর করে রুয়ান্ডায় পাঠানো হবে। তবে, আদালতের কারণে বর্তমানে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডায় পাঠাতে পারছে না সুনাক প্রশাসন।