নৌকা ডুবে ২৩ রোহিঙ্গা নিহত, নিখোঁজ ৩০
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সাগর পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাচ্ছিল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি দল। তবে, নৌকাডুবিতে সাগরে ২৩ রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছে আরও ৩০ রোহিঙ্গা। এ ঘটনায় আটজন বেঁচে গেছেন বলে জানা গেছে। আজ শুক্রবার (১১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।
নৌকাডুবির ঘটনায় বেঁচে ফেরারা বলেছেন, রোহিঙ্গাবাহী নৌকাটি ৫০ জন নিয়ে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। তবে, গত রোববার নৌকাটি ভেঙে গেলে সেটিকে ওই অবস্থায় রেখে চালক ও কর্মীরা পালিয়ে যান। পরে, নৌকাটি ডুবে যায়।
বিবিসি বলছে, প্রতিবছর সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পাড়ি জমানোর চেষ্টা করে রোহিঙ্গারা। ঝুঁকি জেনেও হাজার হাজার রোহিঙ্গা এই পথে পা বাড়ায়।
রোহিঙ্গাদের উদ্ধারকারী একটি দল বিবিসিকে জানিয়েছে, গত সপ্তাহে নৌকাডুবিতে যেসব রোহিঙ্গা মারা গেছে তাদের মধ্যে ১৩ নারী ও ১০ পুরুষ ছিল। নিহত সবাই রোহিঙ্গা মুসলিম।
প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারে মুসলিম রোহিঙ্গার সংখ্যালঘু হিসেবে চিহ্নিত। দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতন ও গণহত্যার জেরে ২০১৭ সালে লাখ লাখ রোহিঙ্গা প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে পাড়ি জমায়। যারা এখনও মিয়ানমারে রয়েছে তারা দেশটি ছাড়ার চেষ্টায় রয়েছে।
নৌকাডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়ারা জানান, রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তের উপকূলেই বিশাল ঢেউয়ে তাদের নৌযানটি ডুবে যায়। মালয়েশিয়ায় যেতে পাচারকারীদের প্রতিজনের জন্য চার হাজার করে মার্কিন ডলার দিয়েছে তারা। এই দুর্ঘটনায় মারা যাওয়াদের মরদেহ অন্য একটি নৌকা দিয়ে উদ্ধার করা হয়। আর কিছু মরদেহ উপকূলে ভেসে আসে।
বিবিসি বলছে, আন্দামান সাগর দিয়ে মাছ ধরার নৌকায় করে সাগরপাড়ি দেওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আর বর্ষা মৌসুমে এই রুটে যাতায়াত আরও কষ্টসাধ্য। এরপরেও মে থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে রোহিঙ্গারা মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ায় পাড়ি জমানোর চেষ্টা করে।
অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য নিজেদের জমি বা সম্পদ বিক্রি করা থেকেও পিছ পা হন না রোহিঙ্গারা। এর মূলে রয়েছে বাংলাদেশের জনাকীর্ণ রোহিঙ্গা শিবিরে বা মিয়ানমারে বিভিন্ন বৈষম্য ও নিষেধাজ্ঞার শিকার হন তারা।