‘লজ্জিত নই’ বললেন মুসলিম শিশুকে চড় মারতে বলা সেই শিক্ষক
ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি স্কুলে মুসলিম সহপাঠীকে চড় মারার নির্দেশ দিয়েছিলেন শিক্ষিকা তৃপ্তা ত্যাগী। সেই ভিডিও পরে ভাইরাল হলে জন্ম নেয় ব্যাপক ক্ষোভের। এ বিষয়ে একটি মামলাও হয়েছে। তবে ওই শিক্ষা বলেছেন, তিনি তাঁর আচরণের জন্য লজ্জিত নন। তৃপ্তি ত্যাগী বলেন, তারা আইন বানিয়েছেন। তবে, স্কুলে শিশুদের নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। তারা এভাবেই শিশুদের নিয়ন্ত্রণ করেন। খবর এনডিটিভির।
তৃপ্তা ত্যাগী মুজাফফরনগরের নেহা পাবলিক স্কুলের অধ্যক্ষ। সাত বছর বয়সী শিশুটিকে থাপ্পড় মারতে বলার সময় তাকে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করতে দেখা গেছে, যে কান্নারত অবস্থায় অসহায়ভাবে মুখ নিচু করে দাঁড়িয়েছিল।
ত্যাগী এনডিটিভিকে বলেন, ‘আমি লজ্জিত নই। আমি একজন শিক্ষক হিসেবে এই গ্রামের মানুষের সেবা করেছি। তারা সবাই আমার সঙ্গে আছে।’ তিনি তার কাজের মূল্যায়ন করতে গিয়ে আরও বলেন, স্কুলে শিশুদের ‘নিয়ন্ত্রণ’ করতে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তৃপ্তা ত্যাগী বলেন, ‘তারা এই আইন তৈরি করেছে, কিন্তু স্কুলে শিশুদের নিয়ন্ত্রণ আমাদেরকেই করতে হয়। আমরা এভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখি।’
ত্যাগী ভিডিও ভাইরাল হওয়ার বিষয়টি ‘ছোট সমস্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘এতে আমার কোনো উদ্দেশ ছিল না। আমি আমার ভুল স্বীকার করছি, তবে এটিকে অপ্রয়োজনে বড় করে তোলা হয়েছে।’
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি শিশু এক পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছে আর শিক্ষিকা তৃপ্তি অন্য শিশুদের একে একে উঠে এসে ওই শিশুকে চড় মারতে নির্দেশ দিচ্ছেন। ক্যামেরার পেছনে থাকা একজনের উদ্দেশ্যে তৃপ্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি তো বলেই দিয়েছি, যত মুসলিম বাচ্চা আছে, তোমরা এখান থেকে চলে যাও।’
ঘটনা তদন্তের পর ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, তারা প্রমাণ পেয়েছেন যে ওই শিক্ষিকা বলেছেন, ‘এসব মুসলিম শিশুর মায়েরা তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার তদারক করেন না। তাদের শিক্ষা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।’
মুজাফফরনগরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অরবিন্দ মাল্লাপ্পা বাঙ্গারি বলেছেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্ত সম্পন্ন করেছি। শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিশুটির বাবার অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ইউপির উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রিজেশ পাঠক বলেছেন, ‘আমরা বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছি এবং সম্পূর্ণ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’