ইসরায়েলের সঙ্গে বৈঠক, লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের জের ধরে লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাজলা আল-মানগোসকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। লিবিয়া যদিও ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি আর তাদের পররাষ্ট্র নীতিতে সবসময় ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার প্রশ্নে অটল তাই এই বৈঠককে কেন্দ্র করে দেশটিতে বিক্ষোভ দানা বাঁধছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠককে সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ইসরায়েল সম্প্রতি তেল সমৃদ্ধ লিবিয়াসহ মুসলিম আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
যদিও লিবিয়ার তিনটি প্রদেশের প্রতিনিধিত্ব করা প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল জানিয়েছে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের এই উদ্যোগ অবৈধ।
এদিকে লিবিয়ার পার্লামেন্টের স্পিকারের অফিস মানগোসকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী আব্দুল হামিদ দেবাইবা বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোহেন জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে ইতালির রোমে একটি সম্মেলনে অংশ নেওয়ার সময় লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাইডলাইন বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে তারা দুই দেশের সম্পর্ক স্থাপনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনাও করেন।
তবে লিবিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মানগোস ইসরায়েলি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করে দেন এবং ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যা হয়েছে তা ছিল অপ্রস্তুত পরিস্থিতিতে সাধারণ সাক্ষাৎ।
এক বিবৃতিতে লিবিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে যে, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই দেখার বিষয়টি কোনো রকমের আলোচনা, মতবিনিময় বা আলাপচারিতা ছিল না। বিবৃতিতে জানানো হয় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কোনো ইচ্ছাই লিবিয়ার নেই।
এদিকে, বৈঠকের খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজধানী ত্রিপোলি ও আরও কয়েকটি শহরে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। বিক্ষুব্ধ লোকজন এ সময় রাস্তা আটকে দেয়, টায়ারে আগুন জ্বেলে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়ায়। তবে এই বিক্ষোভগুলো ছিল অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের।
গত বেশ কয়েক বছর থেকে রাজনৈতিক উত্থান-পতনে অস্থির লিবিয়া। দেশটি বিভক্ত হয়ে আছে ত্রিপোলি ভিত্তিক আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অন্তর্বর্তী সরকার ও দেশটির পূর্বে অবস্থান নেওয়া বিরোধী পক্ষের গঠিত সরকারের কারণে।