চাঁদের পর এবার সূর্য অভিমুখে ভারতের রকেট
চাঁদের পিঠে মনুষ্যবিহীন ল্যান্ডারের সফল অবতরণের পর এবার সূর্য নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে রকেট পাঠালো ভারত। আজ শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) ভারতের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে চার মাসের অভিযাত্রায় সূর্যের সবচেয়ে বাইরের বলয় সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ চালাতে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে আদিত্য-এল-১ রকেট।
আজ ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) ওয়েবসাইটে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে দেখা যায় আগুন ও ধোঁয়ার রেশ রেখে সবার হর্ষোধ্বনি ও করতালির মধ্য দিয়ে সূর্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে রকেটটি। প্রায় পাঁচ লাখ লোক সরাসরি দেখে এই এই সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান। এ ছাড়া আরও কয়েক হাজার লোক এই ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হতে রকেট উৎক্ষেপনের স্থানটিতে জড়ো হয়। মূলত সৌর বাতাস নিয়ে পরীক্ষা চালাতে পাঠানো হচ্ছে এই রকেটটিকে। বাতাসে হঠাৎ আলোচ্ছটার মতো এই দৃশ্যকে পৃথিবীতে এক ধরনের বিঘ্ন হিসেবেই দেখা হয়।
ইসরোর দেওয়া তথ্য অনুসারে মহাকাশযানটি সূর্য নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক গবেষণার জন্য সাত রকমের বৈজ্ঞানিক পেলোড বা সরঞ্জাম নিয়ে যাচ্ছে।
১৯৬০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সূর্যের উদ্দেশে যুগান্তকারী অনুসন্ধানী অভিযান শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা-ইসা অসংখ্য প্রোব পাঠায় সৌর ব্যবস্থা নিরীক্ষার জন্য। তবে, যতি ইসরোর সর্বশেষ মিশনটি সফল হয় তবে তা হবে সূর্যের কক্ষপথে এশিয়ার কোনো দেশের পাঠানো প্রথম প্রোব।
এর আগে গত মাসে রাশিয়ার ব্যর্থতার পর প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের পিঠের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে ভারতীয় নভোযান চন্দ্রযান-৩। যদিও রুশ রকেটটি ভারতের রকেটের চাইতে বেশি শক্তিশালী ছিল কিন্তু চাঁদের পিঠে নামতে সফলভাবে অবতরণ করে ভারতের ল্যান্ডারটি। আর এরপর আজকে আদিত্য-এল-১ এর অভিযাত্রা শুরু হলো। আদিত্য-এল-১-এর নকশা করা হয়েছে এমনভাবে যাতে মহাকাশযানটি চারমাসে প্রায় দেড় মিলিয়ন কিলোমিটার পথ চলতে পারে।
২০১৪ সালে ভারত এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথে কোনো মাহকাশ যান পাঠায়। এ ছাড়া আগামী বছর পৃথিবীর কক্ষপথে তিন দিনের জন্য মনুষ্যবাহী মহাকাশযান পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির।