ভারতের সূর্যাভিজানের নেতৃত্ব দেওয়া কে এই নিগার সাজি?
মহাকাশে ভারতের আধিপত্য বাড়ছে। নিজেদের প্রযুক্তিতে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্রথমবারের মতো সফলভাবে অবতরণ করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে দেশটি। সেদিনই খবর আসে চাঁদের পর সূর্য অভিযানে যাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। গত ২ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করেছে আদিত্য এল-১ রকেট। মানুষ্যহীন এই অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞানী নিগার সাজি।
ভারতের তামিলনাড়ু প্রদেশে সেনগোট্টই শহরে জন্ম নিগারের। কৃষক বাবা ও গৃহিণী মায়ের ঘরেই বেড়ে ওঠা এই নারীর। নিজ এলাকার একটি সরকারি স্কুলে পড়াশুনার হাতেখড়ি নিগারের। শৈশব থেকেই মেধাবী এই নারী ১০তম ক্লাসে জেলায় সেরা শিক্ষার্থী হন। আর ১২তম ক্লাসে স্কুলের সেরা শিক্ষার্থী হন। তিরুনেলাভেলি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক এবং রানছির বিরলা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ইলেকট্রনিক্সস অ্যান্ড কমিনিউকিশন বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করেন নিগার। দুই সন্তানের মা নিগারের স্বামী একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। কাজ করেন দুবাইয়ে।
সব পরীক্ষাতেই ভালো ফল করেছিলেন মেধাবী ছাত্রী নিগার। পড়াশুনার পাঠ চুকিয়ে ১৯৮৭ সালে ইসরোর সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারে যোগ দেন তিনি। পরে, আসেন বেঙ্গালুরুর ইউ আর রাও স্যাটেলাইট সেন্টারে। যোগাযোগ, স্যাটেলাইট, ডিজাইন ও কন্ট্রোল সিস্টেমের মতো জায়গায় দক্ষ হয়ে ওঠেন তিনি। ধীরে ধীরে কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরির প্রযুক্তিতে সেরা হয়ে ওঠেন নিগার। তার বিশেষত্ব নজর কাড়ে ইসরোর পদস্থ বিজ্ঞানীদেরও।
রিসোর্সস্যাট-২ নামের একটি রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক পদে ছিলেন নিগার। এর পাশাপাশি সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং, ইমেজ কমপ্রেশনসহ একাধিক বিষয়ে গবেষণাপত্রও প্রকাশ করেছেন।
আট বছর আগে ভারতের প্রথম সূর্য অভিযান আদিত্য এল-১ এর প্রকল্প পরিচালক হন নিগার। আর গত ২ সেপ্টেম্বর শ্রীহরিকোটা থেকে এর সফল উৎক্ষেপণ নিশ্চিত করেন। সফল উৎক্ষেপণের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ৫৯ বছর বয়সী নিগার বলেন, ‘এই অভিযানের অংশ হতে পেরে আমি খুব খুশি। আমার স্বপ্ন সত্যি করার জন্য ইসরো কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।’