ভারতে ঐতিহাসিক নারী কোটা বিল অনুমোদন
ভারতের পার্লামেন্ট ও রাজ্যসভাগুলোতে নারীদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসনের নিশ্চয়তা রেখে দেশটির পার্লামেন্টে (লোকসভা) উত্থাপিত ঐতিহাসিক বিলটি পাস হয়েছে। বিলটি সর্বপ্রথম প্রস্তাব করা হয় ১৯৯৬ সালে, তবে কয়েক যুগ ধরে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের বিরোধীতার মুখে এটি অমিমাংসিত অবস্থায় থাকে। খবর বিবিসির।
গতকাল বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বেশ কয়েক ঘণ্টাব্যাপী উত্তপ্ত বিতর্কের পর লোকসভায় পাস হয় বিলটি। এখন প্রয়োজন ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ বা রাজ্যসভার আইনপ্রণেতাদের অনুমোদন। সেখানে বিলটি পাস হলে তা ভারতের রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য চলে যাবে। অনুমোদনের পরই তা আইনে পরিণত হবে। তবে, তা বাস্তবায়নের জন্য ভারতে আদমশুমারি সমাপ্তির ওপর অনেকটা নির্ভর করছে।
দেশটিতে প্রতি ১০ বছর অন্তর শুমারির কথা থাকলেও ২০২১ সালে করোনার কারণে তা হয়নি। যদিও আশা করা হচ্ছে, ২০২৫ সালে এই শুমারি অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া আসন সংখ্যা বাড়াতে সংসদীয় আসনের পুনর্বিন্যাস যা সীমা নির্দেশনা হিসেবে পরিচিত, এই বিলটির বাস্তবায়নকে আরও জটিল করতে পারে।
বুধবার লোকসভায় দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিলটি পাসের জন্য সংসদ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। তিনি ভারতের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আরও বেশি করে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বর্তমান লোকসভাকে ‘ঐতিহাসিক আইনসভা’ হিসেবে অভিহিত করেন।
বিলটির পক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৪৫৪ জন এমপি ভোট দেন আর এর বিরোধীতা করেন দুজন এমপি। বিলটির ওপর প্রায় আট ঘণ্টা বিতর্ক চলে। কিছু সদস্য বিলের প্রতি সমর্থন জানালেও এর বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কংগ্রেসের সাবেক সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী জানান তার দল প্রস্তাবিত আইন প্রণয়নের বিষয়টিকে সমর্থন করে। তা ছাড়া তিনি এটির দ্রুত বাস্তবায়নেরও দাবি জানান। আইনটি বাস্তবায়নে দেরি হলে তা নারীদের প্রতি অবিচার করা হবে বলেও উল্লেখ করেন সোনিয়া।
বেশ কয়েকজন বিরোধী এমপি পিছিয়ে পড়া অন্যান্য শ্রেণির নারীদের জন্য আলাদা কোটা প্রবর্তনের দাবি জানান। এ প্রসঙ্গে বুধবার পার্লামেন্টে সোনিয়া গান্ধী বলেন, সরকারের উচিত গ্রোত্র ভিত্তিক একটি শুমারি পরিচালনা করা অথবা পিছিয়ে পড়া অন্যান্য শ্রেণির মানুষের একটি তালিকা তৈরি করা। কিছু বিরোধী এমপি অবশ্য এই বিল পাসের প্রক্রিয়াটিকে ক্ষমতাসীন দলের আইওয়াশ হিসেবে বর্ণনা করেন।