ভারতের পার্লামেন্ট থেকে ১৪১ এমপিকে সাময়িক বরখাস্ত
ভারতের পার্লামেন্টে বিরোধী দলগুলোর আইন প্রণেতাদের (এমপি) প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। মূলত চলতি অধিবেশনের ওসব এমপিদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সংখ্যাও কম না, বিরোধী দলগুলোর যতজন এমপি আছেন, তার অর্ধেক। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানায়, গত সপ্তাহে ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভায় ধোঁয়াকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই সময় প্রতিবাদও জানিয়েছিল ধোঁয়াকাণ্ডে জড়িতরা। এই ঘটনায় ভারতের লোকসভার চলতি অধিবেশনে বিতর্কের আহ্বান জানিয়েছে বিরোধীরা। এর জেরেই বিরোধী দলগুলোর আইন প্রণেতাদের চলতি অধিবেশনের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে ২৬ বিরোধী দলের ১৪১ আইন প্রণেতাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে আগামী জাতীয় নির্বাচনে জোট করে লড়তে যাওয়া ‘ইন্ডিয়া’ও।
গত ১৩ ডিসেম্বর ভারতের লোকসভায় একজন লোক দর্শনার্থী সারি থেকে লাফ দিয়ে বের হয়ে তার হাতে থাকা একটি ক্যানিস্টারের মুখ খুলে দেয়। এ সময় সেই ক্যানিস্টার থেকে হলুদ রঙয়ের ধোঁয়া বের হয়। একই সময়ে লোকসভার বাইরেও ধোঁয়া উড়ায় আরও কয়েকজন। এরপরের দিন নিরাপত্তা লঙ্ঘনের প্রতিবাদ করায় ১৪ জন বিরোধী এমপিকে বরখাস্ত করা হয়। আর গত সোমবার একই কারণে ৭৮ এমপিকে বরখাস্ত করা হয়।
আর আজ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ৪৯ এমপিকে বরখাস্ত করা হয়। লোকসভার চলতি অধিবেশন আগামী শুক্রবার শেষ হবে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) ভারতের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের নেতা জয়রাম রামেশ লেখেন, ‘বিপজ্জনক বিলগুলো যাতে কোনো বিতর্ক ছাড়াই পাস করা যায় সেজন্য বিরোধী দলকে পুরোপুরি ধ্বংস করা হচ্ছে।’
এদিকে, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেকর্ড এমপিকে বরখাস্তের জেরে স্থবির হয়ে পড়েছে পার্লামেন্ট। বরখাস্ত হওয়ার তালিকায় রয়েছে কংগ্রেস নেতা শশি থারুর, অধীর রঞ্জন চৌধুরী, গৌরভ গোগোই, কার্থি চিদাবম্বরাম, এনসিপির সুপ্রিয়া ও সমাজওয়াদি পার্টির ডিম্পল ইয়াদাভ।
কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, সরকার স্বৈরাচারের মতো আচরণ করছে। তারা পার্লামেন্টকে বিজেপির প্রধান কার্যালয়ের মতো ব্যবহার করছে।
এএফপি বলছে, ভারতের লোকসভায় ধোঁয়াকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে পার্লামেন্ট হামলার ২২তম বার্ষিকীতে। ওই সময় পাঁচ বন্দুকধারীর হামলায় ৯ জন প্রাণ হারান, যার মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর আট সদস্য ছিল।
এ ঘটনাটিকে খুবই গুরুত্বর বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশটির সংবাদপত্র দৈনিক জাগরণে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোদি বলেন, এ নিয়ে বিতর্কের কোনো প্রয়োজন নেই।