খাবার অপচয় নিয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য দিল জাতিসংঘ
আজ ৩০ মার্চ। আন্তর্জাতিক শূন্য বর্জ্য দিবস। অথচ জানা গেল, বিশ্বব্যাপী একদিকে যেমন খাদ্যের এক-পঞ্চমাংশ অপচয় হচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষুধায় দিন কাটাচ্ছে ৭৮৩ মিলিয়ন মানুষ। আরও জানা গেল—২০২২ সালে ১০০ কোটি টনের বেশি খাবার নষ্ট হয়েছে, যার বেশির ভাগই অপচয় হয়েছে বাসাবাড়িতে।
আন্তর্জাতিক শূন্য বর্জ্য দিবসের তিন দিন আগেই খাবার অপচয় নিয়ে এমন সব ভয়ঙ্কর তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘ। আন্তর্জাতিক সংস্থাটির ‘খাবার অপচয় সূচক প্রতিবেদন-২০২৪’-এ গত বুধবার (২৭ মার্চ) এ তথ্য জানানো হয়, যা জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক কর্মসূচি-ইউএনইপির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এই তথ্যের বরাতে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।
ব্রিটিশ গণমাধ্যমটি বলছে, জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক কর্মসূচির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে ২০২২ সালে বাসাবাড়ি, খাদ্য সেবা ও খুচরা পর্যায়ে মোট খাদ্যের প্রায় ১৯ শতাংশ, অর্থাৎ, ১০০ কোটি টনের বেশি খাবার অপচয় হয়েছে। ওই সময় বাংলাদেশে গড়ে একজন ব্যক্তি বছরে ৮২ কেজি খাবার অপচয় করেছেন।
ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্ট-২০২৪ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই সময়ে বাংলাদেশের খাদ্য অপচয়ের এ প্রবণতা ছিলো ভারত, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি। জাতিসংঘের হিসেবে বাসাবাড়িতে এক ব্যক্তি বছরে গড়ে ভারতে ৫৫, যুক্তরাজ্য ৭৬, যুক্তরাষ্ট্র ৭৩ ও রাশিয়ায় ৩৩ কেজি খাবার অপচয় করেছে। তবে, এ হিসেবে খাবারের সবচেয়ে বেশি অপচয় হয়েছে মালদ্বীপে ২০৭ কেজি আর সবচেয়ে কম হয়েছে ১৮ কেজি-মঙ্গোলিয়ায়।
এক্স হ্যান্ডেলের এক পোস্টে ইএন নিউজ জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী খাদ্যের এক-পঞ্চমাংশ অপচয় হচ্ছে এবং ৭৮৩ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুধায় দিন কাটাচ্ছে। আরও বলা হয়েছে, মানুষ গড়ে বছরে ৭৯ কেজি খাবার নষ্ট করে।
তিনটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে খাদ্য বর্জ্য সূচক রিপোর্ট-২০২৪ তৈরি করা হয়েছে। যেখানে প্রথমেই বলা হয়েছে, এটি বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে প্রসারিত ডেটা পয়েন্টগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে বৈশ্বিক এবং জাতীয়ভাবে সরবরাকৃত তথ্য থেকে তৈরি, যা মূল প্রতিবেদনের দ্বিতীয় অধ্যায়ে বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছে।
বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ইউএনইপির আগের প্রতিবেদনের সঙ্গে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আগের চেয়ে ২০২২ সালে খাদ্য অপচয় বা খাদ্য উপাদান কিংবা তৈরি খাদ্য নষ্ট করার প্রবণতা বেড়েছে।
২০১৯ সালের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে সংস্থাটি ২০২১ সালে যে রিপোর্ট দিয়েছিল, তাতে বলা হয়েছিল—একজন বাংলাদেশি বছরে ৬৫ কেজি খাদ্য উপাদান কিংবা তৈরি খাদ্য নষ্ট করেন।