রাখাইনের আরেকটি শহর দখলের দাবি বিদ্রোহীদের
মিয়ানমারের জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে তাদের যোদ্ধারা দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের একটি শহর পুরো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। খবর এএফপির।
২০২১ সালে সামরিক জান্তা দেশটির ক্ষমতা দখলের পর বেশিরভাগ সময় বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চললেও গত নভেম্বরে শর্ত ভঙ্গ করে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালায় তারা। আর এর পর থেকেই রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির লড়াই চলছেই।
জান্তা সরকারের কব্জা থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলের পাশাপাশি ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত বরাবর বিস্তীর্ণ এলাকা এখন আরাকান আর্মির দখলে। রাখাইনের উত্তরের নতুন শহর দখলের পর সংগঠনটি শনিবার টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলে, ‘বুথিডংয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সব ঘাঁটি এখন আমাদের দখলে।’ এতে জানানো হয় দখল করা এলাকার মধ্যে রয়েছে একটি কৌশলগত সামরিক সদরদপ্তর। বুথিডং শহরটির বাইরে জান্তা সরকারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে এখনো যুদ্ধ চলছে বলেও জানানো হয় বার্তায়।
রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তে থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান বুথিডংয়ের। সিত্তে এখনো সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ মাসের শুরুতে আরাকান আর্মি জানিয়েছিল, তারা বুথিডংয়ের কাছে একটি কমান্ড সেন্টারে হামলা চালিয়ে জান্তা বাহিনীর কয়েকশত সদস্যকে বন্দি করেছে।
১৯৪৮ সালে বৃটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই স্বায়ত্বশাসন ও সম্পদের নিয়ন্ত্রণের জন্য সীমান্ত এলাকায় যে কয়েকটি জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহী গ্রুপ তৎপরতা চালিয়ে আসছে তার মধ্যে আরাকান আর্মি অন্যতম। এই সংগঠনটি জাতিগত রাখাইন জনগোষ্ঠীর জন্য পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের দাবি নিয়ে লড়াই চালিয়ে আসছে।
গত নভেম্বরে রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৫টিতেই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এসব সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েকশত প্রাণহানি ঘটে আর বাস্তুচ্যুত হয় তিন লাখের বেশি মানুষ। এর আগে ২০১৯ সালে আরাকান আর্মি ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে দুই লাখেরও বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর হারায়। ২০১৭ সালে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সামরিক বাহিনী দমনপীড়ন শুরু করে যা নিয়ে জাতিসংঘের আদালতে গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলছে।