রুশ হামলায় ইউক্রেনে এক লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন
ইউক্রেনের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে রাশিয়ার হামলায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সুমি শহরে এক লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় গ্রিড অপারেটর ইউক্রেনারগো। হামলার পর সুমি শহর এবং এ অঞ্চলের গ্রাহকদের জরুরি পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। অঞ্চলটি রাশিয়ার সীমান্তবর্তী। খবর বিবিসির।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানি স্থাপনা ছাড়া অন্য কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
রাশিয়া ইউক্রেনজুড়ে জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা করছে। এতে প্রায়ই দেশটিতে বড় ধরনের ব্ল্যাকআউট দেখা দিচ্ছে। গ্রীষ্মের তীব্র গরমে ব্যবহারযোগ্য পানি, শীতাতপনিয়ন্ত্রণ বা জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা সরঞ্জাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ।
শুধু গত তিন মাসে ইউক্রেন ৯ গিগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়েছে। জাতীয় জ্বালানি সংস্থা ইউক্রেনারগো বলেছে, শত্রুর হামলায় তারা সমস্ত তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র হারিয়ে ফেলছে। এ ছাড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সমস্ত জলবিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জাতীয় গ্রিড অপারেটরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু হওয়ার আগে ইউক্রেন নেদারল্যান্ডসকে পিকআওয়ারে চাহিদার সমস্ত বিদ্যুৎ দেওয়ার জন্য সক্ষম ছিল, যা দেশটির বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি।
রাশিয়ার হামলা মোকাবিলায় সহায়তার জন্য পোল্যান্ড উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ ইউক্রেনে সরবরাহ করছে। কিন্তু, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও আমদানি করে বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণ করতে না পারায় ইউক্রেনেগোকে সারা দেশে দিনব্যাপী লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
ইউক্রেনারগোর কর্মকর্তা মারিয়া সাতুরিয়ান বিবিসিকে বলেন, তিনি জানেন, এত ঘন ঘন, এত দীর্ঘ এবং এত বেশি গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার জন্য তার সংস্থার বিরুদ্ধে প্রচুর ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কিন্তু তিনি বলেন, অন্য কোনো উপায় নেই।
মারিয়া সাতুরিয়ান বলেন, ‘আমরা যুদ্ধে আছি। জ্বালানি খাত রাশিয়ার সন্ত্রাসীদের অন্যতম লক্ষ্য। এটা স্পষ্ট কেন? কারণ, আমাদের জীবন, আমাদের সভ্যতা সবকিছু বিদ্যুতের ওপর গড়ে ওঠেছে। স্বাধীনতার জন্য আমরা এই মূল্য দিতেই পারি।’
এদিকে ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর কমান্ড টেলিগ্রামে জানিয়েছে, ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ৫ থেকে ৬ জুলাই রাতে রাশিয়ার উৎক্ষেপণ করা ২৭টি শাহেদ কামিকাজে ড্রোনের মধ্যে ২৪টি ভূপাতিত করেছে। ইলেকট্রনিক জ্যামিং এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাহায্যে সুমি অঞ্চলসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ড্রোনগুলো প্রতিরোধ করা হয়।