কেরালায় ভয়াবহ ধসে নিহত বেড়ে ৯৩
কেরালার ওয়ানাড়ে প্রবল বৃষ্টির পর ব্যাপক ধস নেমেছে। এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯৩ জনে দাঁড়িয়েছে। ওয়ানাড়ের মেপ্পাডির কাছে পাহাড়ি এলাকায় রাত দুইটা থেকে চারটার মধ্যে এই ধস নামে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মুন্ডাকাই ও চোরালমালা এলাকা। দুর্গত মানুষদের হেলিকপ্টারে করে উড়িয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা হচ্ছে। এনডিআরএফসহ একাধিক বিপর্যয় মোকাবিলাকারী সংস্থা ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করে দিয়েছে। বিমান বাহিনীর সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
ইউডিএফ বিধায়ক টি সিদ্দিকি বার্তাসংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, ‘কতজন মারা গেছেন, কতজন নিখোঁজ সেই সংখ্যা আমাদের কাছে নেই। অনেক এলাকার সঙ্গে যোগায়োগ করা যাচ্ছে না। এনডিআরএফ কর্মীরা সেই সব জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছেন। জেতা প্রশাসন দুর্গত মানুষদের হেলিকপ্টারে করে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।’
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মুন্ডাক্কাই, চোরালমালা, আত্তারমালা, নুলপুঝার মতো এলাকাগুলোর অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। সেখানে সেতু ভেঙে পড়েছে। রাস্তা ভেসে গেছে। অনেক জায়গায় যাওয়া যাচ্ছে না।
মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, রাজ্যের সব মন্ত্রী ওয়ানাড়ে ত্রাণকাজের সমন্বয় করছেন। রাজ্যের সব এজেন্সি ত্রাণকাজে নেমে পড়েছে। বিজয়ন জানিয়েছেন, এসডিআরএফ, এনডিআরএফ, কুন্নুর ডিফেন্স সিকিউরিটি কোর ত্রাণের কাজে নেমে পড়েছে। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার ত্রাণের কাজে ওয়ানাড়ে যাচ্ছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওয়ানাড়ের প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি এলডিএফ সরকারকে সব ধরনের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি দলের সভাপতি জে পি নাড্ডাকে নির্দেশ দিয়েছেন, কেরালায় বিজেপি কর্মীরা যেন ত্রাণের কাজে সাহায্য করেন। কেরালার নেতা ও কেন্দ্রে মন্ত্রী সুরেশ গোপীর সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছেন।
সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, ‘ওয়ানাড়ের একাংশে ধসের খবরে আমি মর্মাহত। যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন এবং যারা আহত হয়েছেন, আমি তাদের জন্য প্রার্থনা করছি। বর্তমানে উদ্ধারকাজ চলছে। আমি কেরালার মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে সব ধরনের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রীর অফিস জানিয়েছে, নিহতদের পরিবারকে দুই লাখ ও আহতদের ৫০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে।
ধসের খবর পাওয়ার পর এক্স-এ রাহুল গান্ধী বলেছেন, এই ঘটনায় তিনি শোকাহত। যে মানুষরা প্রাণ হারালেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাহুল। যারা আটকে পড়েছেন, তারা শীঘ্রই নিরাপদ জায়গায় যেতে পারবেন বলে রাহুল আশাপ্রকাশ করেছেন।
রাহুল জানিয়েছেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজ চলছে। রাহুল বলেছেন, ‘আমি তাদের অনুরোধ করেছি, তারা যেন সবকটি এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় করেন, একটা কন্ট্রোল রুম খোলেন এবং ত্রাণকাজ চালিয়ে যান।’ তিনি বলেছেন, ‘ইউডিএঅফ কর্মীরা জেলা প্রশাসনকে ত্রাণের বিষয়ে সাহায্য করবেন।’