পাকিস্তানে আফগান সীমান্তের কাছে গুলিতে নিহত ৩৮
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার-পাখতুনখোয়াতে শিয়া মুসলমানদের লক্ষ্য করে বন্দুকধারীদের নির্বিচার গুলিতে কমপক্ষে ৩৮ জন মারা গেছে। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে একটি মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের দাবি, তাদের কয়েকজন সদস্যেরও মৃত্যু হয়েছে।
দেশটির প্রশাসনের কর্মকর্তা জানান, পাকিস্তানের হাইওয়ে দিয়ে শিয়া মুসলিমদের একটি গাড়িবহর যাচ্ছিল। সে সময় তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়া হয়। ঘটনায় অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ২০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা মানবতার শত্রু। অশান্তি সৃষ্টিকারী এই হামলাকারীদের কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, যাদের উপর আক্রমণ চালানো হয়েছে, তারা সাধারণ শান্তিপ্রিয় জনতা।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে একের পর এক সহিংসতার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এর আগেও সেখানে এ ধরনের হামলার ঘটেছে। ফলে ওই রাস্তায় সাধারণ মানুষের গাড়ির সামনে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিনও ওই শিয়া মুসলিমদের গাড়ির সঙ্গে পুলিশের পাইলট গাড়ি ছিল। আচমকাই রাস্তার দুই দিক থেকে মুষলধারে গুলিবৃষ্টি শুরু হয়। প্রায় মিনিটখানেক গুলি চালানো হয়। বহরের গাড়িগুলো কার্যত ঝাঁঝরা হয়ে যায়। ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলেও স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন।
খাইবার পাখতুনখোয়ার কুররামে গত কয়েক মাসে শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে সংঘর্ষে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তানে সুন্নি মুসলিমদের সংখ্যা বেশি। তবে কুররামে শিয়া মুসলিম সুন্নির চেয়ে বেশি। এই অঞ্চলের পাশেই আফগানিস্তান। যেখানে সুন্নি তালেবানরা সরকার চালাচ্ছে। ফলে খাইবার পাখতুনখোয়ায় তেহেরিক-ই-তালেবান এবং ইসলামিক স্টেটের দাপট আছে। তারা মনে করে, সুন্নি মুসলিমরাই ইসলামের ধারক-বাহক। এ নিয়েই শিয়াদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ।
গত মাসে এই রাস্তার ওপরেই এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। তাতেও বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। যার জেরে দীর্ঘদিন ওই হাইওয়ে বন্ধ করে রাখা হয়। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয়, পুলিশের পাইলট গাড়ি নিয়ে ওই এলাকা দিয়ে গাড়ি বহরে যেতে পারবে। কিন্তু তাতেও রক্ষা হলো না। আবার গুলি চলল। প্রাণ গেল নিরাপরাধ সাধারণ মানুষের।