‘অছাত্র বিশৃঙ্খলাকারীদের প্রতিহত করবে ছাত্রলীগ’
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে ‘অছাত্রদের সংগঠন’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রী নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহহ সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসগুলোতে বিশৃঙ্খলা চেষ্টাকারীদের প্রতিহত করবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অতীতের মতোই তাঁদের পাশে থাকবে ছাত্রলীগ।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘিরে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাস জুড়ে চলমান উত্তেজনা প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
‘ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের বাঁশ-লাঠি নিয়ে আসার বক্তব্য’ তুলে ধরে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দিকে এভাবে মারমুখীভাবে এগিয়ে আসা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো বিশৃঙ্খলতা তৈরির চেষ্টা সহ্য করা হবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীরাই তাদেরকে অতীতের মতো প্রতিহত করবে।’
‘অছাত্রদের নিয়ে গড়া ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল’ উল্লেখ করে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় আরও বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে ক্যাম্পাসে কোনো বিশৃঙ্খলতা নেই এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিরবিচ্ছিন্নভাবে তাদের পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পেরেছে। হঠাৎ তারা (ছাত্রদল) কেন ক্যাম্পাসে এভাবে চড়াও হবে? আসলে এমন শান্তিপূর্ণ দেশ তারা কখনো চায়নি।’
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘ছাত্রদল তার পুরনো ইতিহাসের মতো ক্যাম্পাসকে উত্তপ্ত করতে চাইছে। যেভাবে তারা অতীতে ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, এখনো তারা সেটাই করছে। এরই অংশ হিসেবে মিছিলের নামে মহড়া দিচ্ছে। তবে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসকে শান্তিপূর্ণ রাখতে রাস্তায় নেমে এসেছে। তারা সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করেছে।’
‘তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছি আমরা ছাত্রলীগ’ উল্লেখ করে লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীতের মতো তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম, খুন ও হত্যা হতে দিতে পারি না আমরা। বিগত বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো মেধাবীর প্রাণ ঝরেনি, কেন না সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দেওয়া হয়নি। আমরা চাই না এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীতের মতো সন্ত্রাসীদের হাতে প্রাণ ঝরুক। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও তা চায় না। আর এ কারণেই এই প্রতিরোধ।’
এসময় ছাত্রলীগের এই দুই শীর্ষ নেতা জানান, আজ বৃহস্পতিবার সন্ত্রাসীদের হামলায় ছাত্রলীগের ১০ থেকে১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
এদের মধ্যে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তিলোত্তমা সিকদার, রাকিব হাসান, জহির, ঐতিহ্য, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম, পাঠাগার সম্পাদক সৈয়দ ইমাম বাকের, উপ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক সামাদ আজাদ জুলফিকার, উপদপ্তর শিমুল আহমেদ, অর্থ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, অভিজ্ঞান দাস অন্তু প্রমুখ।
জানা গেছে, আজ বেলা ১২টার দিকে হাইকোর্টের সামনে থেকে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষে উভয়পক্ষের নেতাকর্মীদের ইট-পাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। একপর্যায়ে ছাত্রদলকর্মীরা পিছু হটে সুপ্রিম কোর্টের ভিতরে অবস্থান নেন। অপরদিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শহীদমিনারে অবস্থান নেন।
আজ সকাল থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের টিএসসি, মধুর ক্যান্টিন, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, ভিসি চত্বর ও পলাশীসহ সব পয়েন্টে অবস্থান নিতে দেখা যায়। এসময় দুই দলের নেতাকর্মীদের হাতে লাঠি, হকিস্টিক ও লোহার রড হাতে দেখা যায়।