অপরাধ প্রমাণিত হলে নাসির-তামিমার যে সাজা হবে
ক্রিকেটার নাসির হোসেন এবং তাঁর স্ত্রী পরিচয় দেওয়া তামিমা সুলতানা তাম্মীর বিরুদ্ধে ছয়টি ধারায় তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন আদালত। সে প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারক নাসির, তামিমা ও তাঁর মাকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালত আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
এদিকে পিবিআইএর দেওয়া প্রতিবেদনে নাসির, তামিমা ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৬৮/৪৭১/৪৯৪/৪৯৭/৫০০/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ধারা অনুসারে নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
বিষয়টি বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আগে আজ নাসির হোসেন এবং তামিমা সুলতানা তাম্মীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছিল।
মামলার তদন্তে ক্রিকেটার নাসির হোসেন, সৌদিয়া এয়ারলাইনসের বিমানবালা তামিমা সুলতানা তাম্মী এবং তামিমার মা সুমি আক্তারকে দোষী উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ডিভোর্স পেপার ছাড়াই অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে করা মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
এর আগে ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীমের আদালতে তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
রাকিবের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এনটিভি অনলাইনকে আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাদীর (রাকিব হাসান) সঙ্গে এক নম্বর আসামি তামিমা সুলতানার ইসলামি শরীয়ত অনুযায়ী, তিন লাখ এক টাকা দেনমোহরে বিয়ে এবং রেজিস্ট্রি হয়। বিয়ের পর থেকে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করতে থাকেন। তাঁদের তোবা হাসান নামে এক মেয়ে রয়েছে। যার বর্তমান বয়স আট বছর।
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, তামিমা পেশায় একজন কেবিন ক্রু। তিনি সৌদি এয়ারলাইনসে কর্মরত রয়েছেন। চাকরির সুবাদে তিনি ২০২০ সালের ১০ মার্চ সৌদিতে গিয়েছিলেন। মহামারির কারণে জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হইলে সেখানেই অবস্থান করেন। এ সময় ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রাকিবের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হতো।
মামলায় বলা হয়, ‘চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার সঙ্গে দুই নম্বর আসামির (ক্রিকেটার নাসির) কথিত বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা বাদীর নজরে আসে। বাদী এই ধরনের ছবি দেখে হতবাক হয়ে যান। পরবর্তীকালে পত্রিকায় এই বিষয়ে সংবাদ দেখে তিনি ঘটনার বিষয় নিশ্চিত হন।’
এ ছাড়া তাঁদের গায়ে হলুদ ও বিয়ে পরবর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান যথাক্রমে ১৭ ও ২০ ফেব্রুয়ারি সম্পন্ন হয়। যা এরই মধ্যে বিভিন্ন সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘তামিমা বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় নাসিরের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। নাসির বাদীকে ফোন করে জানান যে, সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত এবং তার নিকট তামিমা আছেন। বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় তামিমার নাসিরকে বিয়ে করা যা ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইনে সম্পূর্ণ অবৈধ। আসামির সঙ্গে তিনি অবৈধ বিয়ের সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, যা নিকৃষ্ট ব্যাভিচার।’
অভিযোগে আরও বলা হয়, আসামিদের এরূপ অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে বাদী ও তার শিশু কন্যা মারাত্মকভাবে মানসিক বিপর্যস্ত হয়েছেন। আসামিদের এহেন কার্যকলাপে বাদীর চরমভাবে মানহানি হয়েছে, যা বাদীর জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।