উদ্বোধনের পরই অনলাইনে টিকার রেজিস্ট্রেশন : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নভেল করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধনের পর পরই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম আজ বুধবার দুপুরে এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানান।
প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং গণমাধ্যমকর্মীসহ ১৭ ক্যাটাগরির লোকজন করোনার টিকা নেওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী টিকাদান প্রক্রিয়া ছয় ধাপে সম্পন্ন হবে। প্রথমে এনআইডি কার্ডের মাধ্যমে নিবন্ধন। অনলাইন পোর্টাল থেকে টিকা কার্ড সংগ্রহ। এরপর টিকা দেওয়ার তারিখ ও তথ্য পাঠানো হবে। নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হবে এবং প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার দুই মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট তারিখে পরবর্তী ডোজ দেওয়া হবে। দুই ডোজ নেওয়ার পর সুরক্ষা প্ল্যাটফর্ম থেকে ভ্যাকসিন সনদ দেওয়া হবে। টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধনের ব্যবস্থা করেছে সরকার। আর নিবন্ধনের জন্য সুরক্ষা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে আইসিটি বিভাগ।
যেভাবে নিবন্ধন করবেন
১৮ বছরের নিচে যাঁরা তাদের জন্য কোনো ভ্যাকসিনের ট্রায়াল এখন পর্যন্ত কোথাও হয়নি। তাই সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মেও তাঁরা নিবন্ধনের বাইরে থাকবেন। প্রথমে www.surokkha.gov.bd এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। সেখানে প্রথমেই আছে ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধনের ট্যাব। সেখানে ক্লিক করে দেখা যাবে পরিচয় যাচাইয়ে এই অ্যাপ্লিকেশনে ১৮টি শ্রেণি করা হয়েছে। যার একটি সিলেক্ট করার পর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে নিবন্ধন শুরু করতে হবে।
এই ১৮টি শ্রেণির মধ্যে রয়েছে নাগরিক নিবন্ধন, সরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী, অনুমোদিত সব বেসরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত সব সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা কর্মকর্তা-কর্মচারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা, সম্মুখসারির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, সামরিক ও আধা সামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী, সম্মুখ সারির সংবাদকর্মী, প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিক, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, ধর্মীয় প্রতিনিধি, সৎকার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি, ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় অপরিহার্য কার্যালয়ের কর্মীরা।
এ ছাড়া রয়েছেন সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার সম্মুখসারির কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, পয়ঃনিষ্কাশন ও ফায়ার সার্ভিসের মতো জরুরি সেবার সম্মুখসারির কর্মী, রেলস্টেশন, বিমানবন্দর ও নৌবন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা ও উপজেলায় জরুরি জনসেবায় সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী।
জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর যাচাই হওয়ার পর স্ক্রিনে নিবন্ধনকারীর নাম দেখানো হবে বাংলা ও ইংরেজিতে। সেখানে একটি ঘরে একটি মোবাইল ফোন নম্বর দিতে হবে যে নম্বরে টিকাদান সংক্রান্ত তথ্য এসএমএস করা হবে। মোবাইল নম্বর দেওয়ার পর একটি ঘর পূরণ করতে হবে, যেখানে জানাতে হবে নিবন্ধনকারীর কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে কি না, থাকলে কোনো কোনো রোগ আছে। সেখানে আরেকটি ঘরে জানাতে হবে পেশা এবং তিনি কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কাজে সরাসরি জড়িত কি না।
এরপর বর্তমান ঠিকানা ও কোন কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে ইচ্ছুক, তা নির্বাচন করতে হবে। সব শেষে তথ্য সংরক্ষণ করলে নিবন্ধনকারীর মোবাইল নম্বরে পাঠানো হবে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি)। সেই ওটিপি দিয়ে ‘স্ট্যাটাস যাচাই’ বাটনে ক্লিক করলে নিবন্ধনের কাজ শেষ হবে। নিবন্ধন হয়ে গেলে টিকার প্রথম ডোজের তারিখ ও কেন্দ্রের নাম এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
নিবন্ধনের পরের ধাপ
এরপর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জন্ম তারিখ দিয়ে লগ ইন করে এসএমএসের মাধ্যমে পাওয়া ওটিপি কোড দিয়ে টিকা কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। এসএমএসে যে তারিখ দেওয়া হবে, সেই তারিখে টিকা কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে নির্ধারিত টিকাদান কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে কোভিড-১৯-এর টিকা নিতে পারবেন নিবন্ধনকারীরা। এভাবে দুটি ডোজ শেষ হলে সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন থেকে ভ্যাকসিন প্রাপ্তির সনদ সংগ্রহ করা যাবে।
ভ্যাকসিনেশনের সেন্টার
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা সদর হাসপাতাল, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, পুলিশ-বিজিবি হাসপাতাল ও সিএমএইচ, বক্ষব্যাধি হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে। টিকা দেওয়ার জন্য সাত হাজার ৩৪৪টি দল তৈরি করা হয়েছে। একটি দলের মধ্যে ছয়জন সদস্য থাকবেন। এর মধ্যে দুজন টিকাদানকারী (নার্স, স্যাকমো, পরিবারকল্যাণ সহকারী) ও চারজন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন।