গাজীপুরের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দুর্নীতি অনুসন্ধানের নির্দেশ
গাজীপুরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী চার মাসের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে গাজীপুরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সারোয়ার আহমেদ। দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক শুনানি করেন। দুদকসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গাজীপুরের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ও জিল্লুর রহমান নামে দুই ব্যক্তি গাজীপুরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে রিট দায়ের করেন। গত ২১ আগস্ট একটি পত্রিকায় ‘কিরনের কেরামতিতে বেহাল গাজীপুর সিটি করপোরেশন’- প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিটটি দায়ের করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের কেরামতিতে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। লাগামহীন দুর্নীতি ও অনিয়ম করে সাধারণ কাউন্সিলর হয়ে রাতারাতি হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে যাওয়া, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, লুটপাট, দ্বৈতনাগরিকত্ব, কমিশন বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ বিক্ষুব্ধ নগরবাসী গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের বাবা মরহুমের নূর মোহাম্মদ খান ছিলেন একটি স্কুলের দপ্তরি। এমনকি আসাদুর রহমান কিরন ছিলেন একটি কারাখানার শ্রমিক। স্বৈরশাসক এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগদানের মাধ্যমে আসাদুর রহমান খান কিরনের রাজনীতির হাতেখড়ি। এরপর গাজীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকার এবং শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলা ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নুরুল ইসলাম সরকারের ছত্রছায়ায় টঙ্গীতে রাজনৈতিক জীবন শুরু কিরনের।
২০০০ সালে বর্তমান মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান দ্বিতীয় মেয়াদে টঙ্গী পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে কিরন রাতারাতি আজমত উল্লাহ খানের ঘনিষ্টজন হয়ে যান। এরপর পর্যায়ক্রমে তিনি টঙ্গী পৌরসভার কমিশনার এবং এর ২০১৩ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। কমিশনার নির্বাচিত হয়েই কিরন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পরেন। ২০১৩ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র অধ্যাপক মান্নান ২০১৩ সালে সাময়িক বরখাস্ত হলে আসাদুর রহমান কিরন বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে প্যানেল মেয়র এবং ভারপ্রাপ্ত মেয়র নির্বাচিত হন।