ঘরে ঘরে স্লোগান ‘চারিদিকে উন্নতি, সন্ধ্যা হলেই মোমবাতি’ : রিজভী
চুরিতন্ত্রই হচ্ছে আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রদর্শন এমন মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘মিথ্যা বলাই আওয়ামী লীগের জীবিকা উপার্জনের একমাত্র পন্থা। লুটেরা সরকার আর তার দোসরদের অর্থ এবং ক্ষমতালিপ্সার কারণে দেশ আজ গভীর সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে। যে দেশে অওয়ামী লীগারদের স্বার্থে রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারিত কিংবা আইন প্রণীত হয়, সেখানে এটাই অনিবার্য পরিণতি। ঘরে ঘরে এখন স্লোগান শোনা যাচ্ছে-চারিদিকে উন্নতি, সন্ধ্যা হলেই মোমবাতি।’
আজ বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘এই নিশিরাতের লুটেরা সরকার দেশকে দেউলিয়াত্বের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ভাণ্ডার এখন শূন্য প্রায়। সরকার রিজার্ভের ভুল তথ্য দিয়ে জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে। সরকার নিজেদের গদি টিকিয়ে রাখার জন্য সবকিছু নিয়ে লুকোচুরি খেলছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে ভিন্ন। প্রধানমন্ত্রী মিথ্যার ওপর বসে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে একেক সময় একেক কথা বলছেন। তিনি ২৭ জুলাই বলেছিলেন, আমাদের এখন যে রিজার্ভ আছে, তা দিয়ে ছয় থেকে নয় মাসের জন্য খাবার আমদানি করতে পারব। তার একদিন পরে ২৮ জুলাই বললেন, তিন মাসের রিজার্ভই যথেষ্ট। কিন্তু জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের তহবিল খালি হয়ে যাচ্ছে। পরিকল্পনামন্ত্রী গতকাল বলেছেন, আমরা এখন একটু অসুবিধায় পড়ে গিয়েছি। টাকার ঘাটতি পড়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, অবশ্যই দেশের অর্থনীতি চাপে আছে।’
রিজভী আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ দুই মন্ত্রী ও গভর্নরের এই স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ। বিদগ্ধ অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর রিজার্ভও এখন অবশিষ্ট নেই। সরকারের কাছে দেশ চালানোর মতো টাকাও নেই। বাংলাদেশের মানুষ এখন ভয়াবহভাবে বিপদের সম্মুখীন। প্রতিদিন তাদের সামনে হাজির হচ্ছে নিত্য নতুন সঙ্কট। এমনিতে দ্রব্যমূল্য, গ্যাস-বিদ্যুৎ, পরিবহণ, লোডশেডিং সমস্যায় জর্জরিত। এর মধ্যে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে জ্বালানি তেলের স্মরণকালের সর্বোচ্চ সীমাহীন মূল্যবৃদ্ধি। এর প্রভাব পড়েছে সর্বক্ষেত্রে। জনজীবনে মারাত্মক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষেরা দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষেও টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা এতটা সঙ্গীন হয়ে পড়েছে যে, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য কোনো একক উপায় খুঁজে পাচ্ছে না গণধিকৃত নিশিরাতের ভোট ডাকাত সরকার। সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছে। ফলে তারা হুমকি-ধমকি থেকে শুরু করে প্রতিবাদী মানুষকে হত্যা করা শুরু করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার দেশের অর্থনীতি শেষ করেছে। এটি চোরের দেশ, ডাকাতের দেশ, গুম-খুনের দেশ, ব্যাংক লুটের দেশ, ভোট চোরের দেশ, নারী ধর্ষণের দেশ হিসেবে এরা বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের পরিচয় দিতে চাচ্ছে। তাদের চৌর্যবৃত্তির কারণেই বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে তারা মারাত্মকভাবে বিনষ্ট করছে।’