চট্টগ্রামের নির্বাচনটি অনিয়মের নির্বাচনের মডেল : ইসি মাহবুব
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচনে যে অরাজকতা দেখা গেছে, তাতে আমি হতাশ। আমার আশঙ্কাই শেষপর্যন্ত সত্য হলো এবং সাবধানবাণীতে কোনো কাজ হলো না।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের নিজ কার্যালয়ে ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন সম্পর্কে আমার বক্তব্য’ শিরোনামে একটি লিখিত বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনার এসব কথা বলেন।
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘নির্বাচনের পূর্বে ও নির্বাচনকালে মোট চারজনের প্রাণহানি প্রকারান্তরে চারটি পরিবারের প্রাণহানির নামান্তর। সহিসংতা, কেন্দ্র দখল, পুলিশের গাড়ি ও ইভিএম ভাঙচুর ইত্যাদি ঘটনা এই নির্বাচনকে কলঙ্কিত করেছে। এ ধরনের তাণ্ডব বন্ধ করতে আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ খুঁজে পেতে হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার পরিবর্তন ব্যতীত তা সম্ভব হবে না। এজন্য দল-মত নির্বিশেষে সকলের ঐকমত্য প্রয়োজন।’
ইসি মাহবুব বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনটি অনিয়মের নির্বাচনের একটি মডেল। আগামীতে দেশব্যাপী যেসব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তাতে এই মডেল অনুসরণ করা হলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বসভায় আমরা আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখতে পারব না। আমরা সকল নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় শামিল হতে চাই।’
মাহবুব তালুকদার আরো বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট পড়েছে শতকরা সাড়ে ২২ ভাগ মাত্র। এত অল্পসংখ্যক ভোট গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নিয়ামক হতে পারে না। এই পরিস্থিতি নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থাহীনতার পরিচায়ক, যা গণতন্ত্রের জন্য এক অশনিসংকেত। সুষ্ঠু পরিবেশে অবাধ, নিরপেক্ষ, আইনানুগ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে ভোটার উপস্থিত অবশ্যই বেশি হতো। স্বাধীনতার ৫০ বছরে, আমরা সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারব না, তা মেনে নেওয়া যায় না।’
এর আগে আজ দুপুরে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ২২.৫২ ভাগ পড়েছে।
এতে সেখানে মেয়র পদে মোট সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে রেজাউল করিম চৌধুরীর নৌকা মার্কায় ভোট পড়েছে তিন লাখ ৭৯ হাজার ২৪৮টি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন পেয়েছেন ৫২ হাজার ২৪৮ ভোট।