টাঙ্গাইলের সাবেক মেয়র সহিদুরের জামিন বিষয়ে রুল খারিজ
টাঙ্গাইলে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন প্রশ্নে রুল জারি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আর সহিদুর রহমান খান মুক্তির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ বলেন, ‘এ আসামি ছয় বছর পলাতক ছিলেন। আর মামলার বিচারকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ দুটো বিষয়সহ আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আদালত তার জামিন প্রশ্নে রুলটি খারিজ করেছেন।’
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ তার কলেজপাড়া বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার তিনদিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্টে আনিসুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলী নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। আদালতে তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে এ হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সানিয়াত খানের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান।
মুক্তি অভিযুক্ত হওয়ার পর দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থেকে ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করেন।
চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি ‘শারীরিক ও মানবিক দিক বিবেচনায়’ টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাসুদ পারভেজ শর্ত সাপেক্ষে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুক্তিকে জামিন দেন। পরে ওইদিন তার অন্তবর্তী জামিন বাতিল করা হয়। এরপর হাইকোর্টে জামিন চাইলে ২৭ এপ্রিল আদালত তাকে ছয় মাসের অন্তবর্তী জামিন দিয়ে রুল জারি করেন। কেন তাকে নিয়মিত জামিন দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। কিন্তু জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার আদালতে আবেদন করলে পরদিনই মুক্তির জামিন স্থগিত করা হয়। আর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি আপিলের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালতের বিচারক।
পরে আপিল বিভাগ জামিনে স্থগিতাদেশ বহাল রেখে হাইকোর্টকে দ্রুত রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। সে ধারাবাহিকতায় রুল শুনানির পর তা খারিজ করলেন হাইকোর্ট।