নির্বাচনে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সরকার নতুন নতুন আইন করছে : মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সরকার নতুন নতুন আইন করছে, যাতে কেউ প্রতিবাদ করতে না পারে। আজ মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, গণতন্ত্র এবং সাংবিধানিক কাঠামো’ শীর্ষক আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে সরকার নতুন নতুন আইন করছে—যাতে কেউ রুখে দাঁড়াতে না পারে, প্রতিবাদ না করতে পারে। নির্বাচনে প্রতিপক্ষকে আইন দিয়ে ঘায়েল করে তারা পার পেতে চায়।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এখন পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ। আমাদের গণতন্ত্রকামী জাতিকে একটি ভয়াবহ সংঘাতের দিকে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। কীভাবে নাগরিককে ভয়ভীতি দেখিয়ে দাস করে রাখা যায়, তারই প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে।’ তিনি বলেন, ‘এখন একটাই মত, এ সরকারকে সরাতে হবে। কারণ, একে সরানোর কোনো বিকল্প নেই। বিচার বিভাগের বিচার পাওয়া এখন একটা ভাগ্যের ব্যাপার। অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে তারা পুরোপুরি ধ্বংস করেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানতেই চায় না। তারা বলে, এটা বাতিল হয়েছে, কবর হয়েছে। আপনারা যখন এই ব্যাবস্থার দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন। তখন কি এটা জীবন্ত ছিল? আমরা আপনাদের দাবি মেনেছিলাম। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়েছিল। নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন দিতে হবে। এর মাধ্যমে সবাই ভোটাধিকার ফিরে পাবে। ডিজিটাল আইন নামে এই কালা কানুন বাতিল করতে হবে।’
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘আসুন, আমরা বৈষম্য কমিয়ে সাম্যের একটি দেশ গড়তে একসঙ্গে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। কারণ, দানব সরকার আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে। একে ঘাড় থেকে নামিয়ে ফেলতে হবে। এজন্য আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই সরকার ক্ষমতা থাকার জন্য সব যন্ত্র ব্যবহার করছে। এর একটি যন্ত্র হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এই ডিজিটাল আইন গণতন্ত্রের পরিপন্থী। আজকে তারা মুক্তিযোদ্ধা চেতনা ধ্বংস করে দিয়েছে। লুটপাট করে বিদেশে টাকা পাচার করেছে।’
ড. মোশাররফ বলেন, ‘এই সরকার কিছু কালা কানুন আমাদের ওপর চাপিয়ে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করবে। তাদের দুরভিসন্ধি হলো এসব কালা কানুন দিয়ে তারা আন্দোলনকে বন্ধ করে দেবে। গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী সরকারকে বিতাড়িত করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় ও সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স ওবং শামা ওবায়েদের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, শাজাহান ওমর, বরকত উল্লা বুলু, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, বিজন কান্তি সরকার, অ্যাডভোকেট সুকমল বড়ুয়া, ক্যাপ্টেন সৈয়দ সুজা উদ্দিন প্রমুখ।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি (জাফর) এর চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক জোনায়েদ সাকি, গণ-অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া, সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা প্রমুখ।